Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • ভারত-যুক্তরাজ্য ঐতিহাসিক চুক্তি: চাকরি, রফতানি, বিনিয়োগ— সব খাতে এক বিশাল ঝাঁপ
বিদেশ

ভারত-যুক্তরাজ্য ঐতিহাসিক চুক্তি: চাকরি, রফতানি, বিনিয়োগ— সব খাতে এক বিশাল ঝাঁপ

FTA
Email :24

ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। এই ঐতিহাসিক চুক্তির লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করে ১২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো। এটি গত এক দশকের মধ্যে কোনও উন্নত দেশের সঙ্গে ভারতের সবচেয়ে বিস্তৃত এবং কৌশলগত বাণিজ্যিক চুক্তি।

এই চুক্তির সবচেয়ে বড় লাভ ভারতের জন্য হল ইউকে বাজারে নজিরবিহীন প্রবেশাধিকার। প্রায় ৯৯ শতাংশ ভারতীয় পণ্যের উপর থেকে শুল্ক তুলে দেওয়া হচ্ছে (FTA)। বর্তমানে যেসব শ্রমনির্ভর রফতানি যেমন— টেক্সটাইল, চামড়াজাত পণ্য, জুতো, রত্ন ও গহনা, গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী— যুক্তরাজ্যে ৪% থেকে ১৬% পর্যন্ত শুল্কের মুখে পড়ে, সেগুলোর প্রতিযোগিতার ক্ষমতা এখন কয়েকগুণ বাড়বে (FTA)।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তির ফলে ভারতীয় রফতানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে, দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। চামড়া শিল্প একাই আগামী দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে অতিরিক্ত ৫% বাজার দখল করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ইলেকট্রনিক্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের রফতানিও ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা (FTA)।

পরিষেবা খাতে নতুন সম্ভাবনা

পরিষেবা খাতেও ভারতের জন্য বড় সুবিধা এনে দিচ্ছে এই FTA। রফতানির পাশাপাশি চুক্তিটি ভারতীয় পেশাদারদের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রবেশ সহজ করে দিচ্ছে। শেফ, যোগা প্রশিক্ষক, সঙ্গীতশিল্পী এবং চুক্তিভিত্তিক পরিষেবাদানকারীরা এই চুক্তির পর যুক্তরাজ্যে আরও সহজে কাজ করতে পারবেন। এছাড়া ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং কর্পোরেট হস্তান্তর কর্মীদের জন্যও নীতিগত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, যুক্তরাজ্যে অস্থায়ীভাবে কর্মরত ভারতীয়দের জন্য তিন বছরের সামাজিক সুরক্ষা কর মাফ করা হয়েছে। এর ফলে ভারতীয় পেশাদার এবং তাঁদের নিয়োগকারী সংস্থাগুলোর বছরে প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। তথ্যপ্রযুক্তি, আর্থিক পরিষেবা এবং অন্যান্য পেশাগত পরিষেবা খাতে চুক্তিটি নতুন কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি আনবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসার পথ প্রশস্ত

চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য এখন ভারতের ২০০ কোটির বেশি মূল্যের কেন্দ্রীয় সরকারি টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে (নন-সেন্সিটিভ সেক্টরে)। এতে একদিকে যেমন বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, অন্যদিকে ভারতীয় সংস্থাগুলিও আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে বাধ্য হবে।

এই চুক্তির মাধ্যমে নতুন দিগন্ত খুলছে উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব এবং সরকারি ক্রয় নীতিতে। এতে ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও পূর্বানুমানযোগ্যতা বাড়বে, যা দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে।

বিদেশি বিনিয়োগ টানবে ভারত

FTA-র মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নত অর্থনীতির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলে ভারত দেখিয়ে দিল, তারা বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরও গভীরভাবে জড়াতে প্রস্তুত। এই পদক্ষেপ ভারতের অর্থনীতিকে আরও খোলা ও উদার করে তুলবে, যা ভবিষ্যতে আরও বেশি FDI (বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ) আকর্ষণ করবে।

এছাড়া ভারতের সাধারণ মানুষের জন্য কিছু আমদানি পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। যেমন— মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও কিছু বিলাসবহুল পণ্যে দাম কমবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts