পাকিস্তানের কারাবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan) সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ এনেছেন। তিনি (Imran Khan) বলেন, নিজের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর জেনারেল মুনির প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেছেন এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবির ওপর জুলুম করছেন।
ইমরান (Imran Khan) বলেন, “প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আমি যখন জেনারেল আসিম মুনিরকে আইএসআই প্রধানের পদ থেকে সরাই, তখন তিনি আমার স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বুশরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, এসব বিষয়ে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই এবং তিনি দেখা করবেন না।”
তিনি (Imran Khan) দাবি করেন, এই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই জেনারেল মুনির বুশরা বিবিকে মিথ্যা মামলায় ১৪ মাস ধরে কারাগারে রেখেছেন এবং অমানবিকভাবে আচরণ করছেন।
ইমরান আরও বলেন, “আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন প্রতিশোধমূলক আক্রমণ পাকিস্তানের ইতিহাসে নজিরবিহীন। কোনো সামরিক শাসনকালেও এমন হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, বুশরা একজন গৃহিণী, রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, অথচ বারবার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। গত চার সপ্তাহ ধরে তাঁকে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের ৯ মে যেসব সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়েছিল, তা আসলে “লন্ডন প্ল্যান”-এর অংশ, যার উদ্দেশ্য ছিল পিটিআইকে ধ্বংস করা।
“আমার দলকে নিষিদ্ধ করতে, নেতাকর্মীদের বন্দি করতে, ভোট চুরি করে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের চাপিয়ে দিতে এই ষড়যন্ত্র করা হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করা হয়েছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে,” বলেন ইমরান।
তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসবিরোধী আদালত ও বহু বিচারক এই নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত। “৯ মে’র সিসিটিভি ফুটেজ আজও আদালতে তোলা হয়নি। কোনো বিচারক সাহস করেননি এই ফুটেজ চেয়ে প্রমাণভিত্তিক রায় দিতে,” বলেন তিনি।
ইমরান ৯ মে ও ২৬ নভেম্বরের “গণহত্যা” নিয়ে স্বতন্ত্র বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।
“আজ পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা সবচেয়ে লজ্জাজনক অবস্থায়। একসময়ের বিতর্কিত বিচারক মুনিরের পথেই হাঁটছেন এখনকার প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ঈসা। ন্যায়বিচার নয়, নিজেদের পদ আর সুবিধা রক্ষাই যেন এখন তাদের উদ্দেশ্য,” বলেন তিনি।
গত সপ্তাহে পিটিআইয়ের ১১ জন কর্মীকে ৯ মে’র সহিংস বিক্ষোভের দায়ে সাজা দিয়েছে আদালত। ওইদিন সামরিক স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বর্তমানে ইমরান খান বহু মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ২০২৩ সাল থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি রয়েছেন।