ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron) সোমবার এক বিস্ফোরক মন্তব্যে বলেছেন, ক্ষমতাধর দেশগুলোর আরোপিত শুল্ক (ট্যারিফ) অনেক সময়ই বাণিজ্য ভারসাম্য আনার জন্য নয়, বরং এক ধরনের ‘চাপ প্রয়োগ’ বা ‘ব্ল্যাকমেইলের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্পেনের সেভিয়া শহরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়ন সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট (Emmanuel Macron)। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরি থাকলেও, ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron)সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি।
ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron) বলেন, “আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্বাধীনতা এবং ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। যেসব শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে, সেগুলো মূলত শক্তিধর দেশগুলোর দ্বারা তৈরি, এবং এগুলো প্রকৃতপক্ষে ভারসাম্য আনার জন্য নয়—এগুলো প্রায়শই ব্ল্যাকমেইলের উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হয়।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় যখন বিশ্বের বহু উন্নয়নশীল দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার শুরুতে রয়েছে, তখন নতুন করে শুল্ক আরোপ এবং বাণিজ্যযুদ্ধ সৃষ্টি করা একপ্রকার ‘অপদার্থতা’।
এ সময় ম্যাক্রোঁ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-র সংস্কারের উপর জোর দেন এবং বলেন যে এটি বৈষম্য হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাপী আমদানি পণ্যের উপর ১০%-৫০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যদিও পরে তিনি সিদ্ধান্ত আংশিকভাবে পরিবর্তন করে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক হার কিছুটা কমান।
জাতিসংঘের বাণিজ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছিল যে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই শুল্কনীতি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য মারাত্মক ধাক্কা হতে পারে। বিশেষ করে লেসোথো, কম্বোডিয়া, লাওস, মাদাগাস্কার ও মিয়ানমারের মতো দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, “একের পর এক শুল্ক আরোপ আর বাণিজ্যযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই যখন ইউরোপীয় দেশগুলোর ওপর প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি ব্যয় করার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তখন বিষয়টি আসলেই যুক্তিহীন।”