শুক্রবার এক বিস্ফোরক মন্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার পর মধ্যপ্রাচ্যে বড়সড় যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হলেও তিনি (Donald Trump) মোটেই চিন্তিত নন। এই হামলায় ইরানের শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডাররাও নিহত হয়েছেন।
রয়টার্স-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প (Donald Trump) জানান, ইসরায়েলকে প্রথমে তিনি কিছুটা সময় দিতে বলেছিলেন, যাতে ইরান কূটনৈতিকভাবে সমঝোতার পথ বেছে নিতে পারে। কিন্তু তিনি তেহরানকে ৬০ দিনের সময় দিয়েছিলেন—এবং শুক্রবার ছিল সেই সময়সীমার ৬১তম দিন।
তবে ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, এখনও সব শেষ হয়ে যায়নি। আমেরিকা ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী রোববার ওমানে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইরানি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা। তবে ইসরায়েলের এই হামলার পর তিনি আশঙ্কা করছেন, ইরান হয়তো বৈঠকে অংশ নাও নিতে পারে।

এই ঘটনার কিছু ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প তার Truth Social অ্যাকাউন্টে লেখেন—”ইরানের কট্টরপন্থীরা গলা ফাটিয়ে কথা বলছিল, কিন্তু তারা জানতো না তাদের কী হতে চলেছে। এখন তারা সবাই মৃত। আর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
শুক্রবার সকালেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি আগেই জানতেন যে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় আঘাত করতে যাচ্ছে। ৮ জুন রাতেই তিনি Camp David-এ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন, যেখানে ইরান প্রসঙ্গ আলোচিত হয়। পরদিন তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেন।
ট্রাম্প বলেন—”আমি সব জানতাম। আমি ইরানকে অপমান ও ধ্বংস থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। খুব চেষ্টা করেছিলাম। আমি চেয়েছিলাম একটা চুক্তি হোক। এখনও দেরি হয়নি। চাইলেই এখনো আলোচনা হতে পারে।”
ইসরায়েলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন,”আমেরিকা সবসময় ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র।” ইরানের পাল্টা আক্রমণ প্রসঙ্গে ট্রাম্প শুধু বলেন, “দেখা যাক কী হয়।”
ইসরায়েলের প্রথম হামলার পাল্টা জবাবে ইরান শুক্রবার টেল আবিব লক্ষ্য করে ১০০টিরও বেশি ড্রোন পাঠায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দেশীয় সীমান্তের বাইরে থেকেই ড্রোনগুলি আটকাতে সক্ষম হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই হামলার জন্য তোমাদের কষ্টকর ও তিক্ত মূল্য চোকাতে হবে।”