যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) সোমবার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে কোনও ধরনের আলোচনা করছেন না এবং কিছুই প্রস্তাবও দিচ্ছেন না। তাঁর (Donald Trump) এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়, যখন ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ওয়াশিংটন যদি ভবিষ্যতে ইরানের ওপর আর কোনও সামরিক হামলার সম্ভাবনা বাতিল না করে, তবে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
একটি গভীর রাতের পোস্টে ট্রাম্প (Donald Trump) Truth Social-এ লেখেন, “আমি ইরানকে কোনও কিছুই দিচ্ছি না—ওবামার মতো নয়, যিনি ‘পারমাণবিক অস্ত্রের পথ’ হিসেবে পরিচিত সেই মূর্খ JCPOA চুক্তির আওতায় তাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিয়েছিলেন, যে চুক্তি এখন আর অস্তিত্বেই নেই। আমি তো তাদের সঙ্গে কথাও বলছি না, কারণ আমরা ইতিমধ্যেই তাদের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছি!”
এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক মাজিদ তাখত-রাভাঞ্চি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র (Donald Trump) আলোচনায় ফেরার ইচ্ছার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে এখনো কোনো তারিখ বা আলোচনা প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। আমাদের প্রশ্ন একটাই—আলোচনার মধ্যেও যদি তারা আগ্রাসন চালায়, তবে সেই আলোচনার মানে কী?”
তাখত-রাভাঞ্চি আরও বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে লক্ষ্য করে কোনও ধরনের ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা সরকার বদলের পরিকল্পনায় নেই।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান যখন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময়ই ইসরায়েল হঠাৎ ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। এই আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ে এবং তারা ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে—ফোরদো, নাটানজ ও ইসফাহান—একযোগে বিমান হামলা চালায় ২১ জুন।
এদিকে, শনিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আমাদের সর্বোচ্চ নেতার প্রতি এমন অবমাননাকর ভাষা আশা করি না।”
এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “ইরানিদের জটিলতা আর দৃঢ়তা আমাদের অসাধারণ কার্পেটের মতো—যেগুলো হাজার হাজার ঘণ্টা পরিশ্রম ও ধৈর্য দিয়ে তৈরি হয়। কিন্তু আমরা জাতি হিসেবে খুব সহজ—আমরা আমাদের মূল্য জানি, আমাদের স্বাধীনতার গুরুত্ব বুঝি এবং অন্য কাউকে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে দিই না।”