রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকের একদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) রবিবার তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম Truth Social-এ একটি ছোট কিন্তু ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা পোস্ট করেন। তিনি লিখেছেন, “রাশিয়া নিয়ে বড় অগ্রগতি হয়েছে, সঙ্গে থাকুন।” তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ট্রাম্পের (Donald Trump) এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। অনেকে মনে করছেন, তিনি হয়তো ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা (security guarantee) দেওয়ার সম্ভাবনার কথা ইঙ্গিত করেছেন। কারণ ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, বৈঠকে পুতিন নাকি প্রথমবারের মতো এই বিষয়ে কিছুটা নমনীয়তা দেখিয়েছেন। তাঁর দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ ইউক্রেনকে ন্যাটো চুক্তির Article 5-এর মতো একটি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রস্তাব রাখতে পারে, এবং তাতে পুতিন সরাসরি আপত্তি জানাননি।
প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকে ট্রাম্প (Donald Trump) ও পুতিন কিছু বিষয়ে একমত হলেও ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ থামানো নিয়ে কোনও বড় সমঝোতা হয়নি। ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো এখন ভাবছে কীভাবে মস্কোর উপর চাপ বাড়ানো যায়। তবে এই বৈঠকের তাৎপর্য অনেক, কারণ ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ ইউক্রেনে আক্রমণের পর এই প্রথমবার পশ্চিমা মাটিতে পা রাখলেন পুতিন।
ট্রাম্পের (Donald Trump) পোস্ট আসার কয়েক মিনিট আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এই বৈঠকে এমন কিছু আলোচনা হয়েছে যা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে “সম্ভাব্য অগ্রগতি” আনতে পারে। যদিও তিনি সতর্ক করে দেন, এখনই শান্তিচুক্তির আশা করা ঠিক নয়। রুবিওর মতে, “এখনও যুদ্ধ চলতে পারে, তবে আলোচনার মতো কিছু বিষয় সামনে এসেছে। সেটাই পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য যথেষ্ট।” তিনি আরও জানান, যদি আলোচনায় শান্তি না আসে, তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এরই মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের নেতারা। ইউরোপীয় দেশগুলো চাইছে ইউক্রেনের পক্ষে শক্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে, যেখানে আমেরিকার ভূমিকা থাকবে সবচেয়ে বড়।
রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প ও পুতিন বৈঠকে এমন একটি প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করেছেন যেখানে রাশিয়া হয়তো দখল করা কিছু ছোট এলাকা ছেড়ে দেবে, আর ইউক্রেন তার বিনিময়ে পূর্বাঞ্চলের আরও সুরক্ষিত কিছু এলাকা ছাড়বে। বাকিটা যুদ্ধক্ষেত্র “ফ্রিজ” হয়ে থাকবে।
রবিবার ব্রাসেলসে জেলেনস্কি স্পষ্ট বলেন, আলোচনার ভিত্তি হতে হবে বর্তমান ফ্রন্টলাইন। তিনি জানান, “আমরা বাস্তব আলোচনায় রাজি, তবে তা শুরু হোক যেখানে ফ্রন্টলাইন এখন রয়েছে।” তিনি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যুদ্ধবিরতির (ceasefire) দাবি করেন। তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছে ইউরোপীয় দেশগুলোও। জেলেনস্কি বলেন, “আমাদের পাশে ওয়াশিংটন থাকা জরুরি।”