ভারতের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসিয়ে চমকে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। তবে তিনি এখানেই থেমে থাকলেন না। বুধবার রাতে, এই শুল্ক ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আরও এক বিস্ফোরক ঘোষণা করে জানান—আমেরিকা এবার পাকিস্তানের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এবং এই চুক্তি শুধু দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নয়, বদলে দিতে পারে ভারত-পাকিস্তানকেও ঘিরে কূটনৈতিক পরিস্থিতি (Donald Trump)।
ট্রাম্পের (Donald Trump) কথায়, পাকিস্তানে এবার একটি বিপুল তেলের ভাণ্ডার তৈরির কাজ শুরু করতে চলেছে আমেরিকা। এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করবে মার্কিন তেল সংস্থাগুলি, যদিও এখনও নির্দিষ্ট কোনও কোম্পানির নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তবে খোঁজ শুরু হয়ে গেছে।
আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল ট্রাম্পের(Donald Trump) মন্তব্য—“কে জানে, কোনওদিন পাকিস্তান হয়তো এই তেল ভারতেও বিক্রি করতে পারে!” এমন মন্তব্য ভারতকে উদ্দেশ করেই ছুড়ে দেওয়া বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। কারণ, এই ঘোষণার ঠিক আগেই ভারতকে শাস্তি দিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও তেল আমদানি করায় ‘পেনাল্টি’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও সেই জরিমানার অঙ্ক বা শর্ত এখনও তিনি স্পষ্ট করেননি।
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের তরফে যদিও কয়েকদিন আগেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, আমেরিকার (Donald Trump) সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার নিজেই এই খবর দেন। এবার সেই ঘোষণাকে সত্যি করে দিলেন ট্রাম্প।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, তাঁর হোয়াইট হাউসে কেটেছে এক ‘ব্যস্ততম’ দিন। মূলত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক দরকষাকষিতেই সময় কেটেছে তাঁর। একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে সরাসরি কথাও হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প। তাঁর দাবি, “সবাই আমেরিকাকে খুশি রাখতে চায়।”
এই দুই ঘোষণার সময়ে এবং বক্তব্যে ট্রাম্পের কূটনৈতিক বার্তা একেবারেই স্পষ্ট—ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ভাঁজ এখন কঠিনতম পর্যায়ে, আর পাকিস্তানকে সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ এশিয়ায় এক নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে চাইছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বে ওয়াশিংটনের অস্বস্তি রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। এবার তা প্রকাশ্যে আনলেন ট্রাম্প—একদিকে ভারতের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপ, অন্যদিকে পাকিস্তানকে কৌশলগত ‘বন্ধু’ করে তোলার চেষ্টা।
এখন নজর এই প্রশ্নে—ভারত কি শুল্ক এবং পেনাল্টির প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা জবাব দেবে? আর পাকিস্তান-আমেরিকা এই নতুন তেলের চুক্তির ফলেই কি বদলে যাবে উপমহাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্র?