যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান ট্যারিফ ও বাণিজ্য সংঘাতের (Tariff War) মাঝেই ফোনে কথা বললেন দুই দেশের শীর্ষ নেতা—ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং। এই ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উভয় দেশের পররাষ্ট্র দপ্তর।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ফোন কলটি শুরু করেছিলেন ট্রাম্প নিজেই, এবং এই সংলাপ এমন এক সময় হলো যখন দু’দেশের সম্পর্ক উত্তেজনার চূড়ায় (Tariff War) । এর মাত্র একদিন আগেই ট্রাম্প নিজের সামাজিক মাধ্যম Truth Social-এ লিখেছেন, “আমি চীনের প্রেসিডেন্ট শি-কে পছন্দ করি, সব সময় করেছি, কিন্তু তিনি খুব কঠিন একজন ব্যক্তি, তার সঙ্গে চুক্তি করা খুব কঠিন!!!”
এই বছর এটি মাত্র দ্বিতীয়বার, যখন ট্রাম্প ও শি সরাসরি একে অপরের সঙ্গে কথা বললেন। এর আগে তারা কথা বলেছিলেন ১৭ জানুয়ারি, অর্থাৎ ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের আগেই। এরপর দু’দেশের মধ্যে মে মাসে একটি সাময়িক (Tariff War) চুক্তি হয়, যেখানে পারস্পরিক ট্যারিফ (Tariff War) কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই চুক্তি স্থায়ী হয়নি।
এপ্রিল মাসে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, চীন থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ১৪৫% হারে শুল্ক আরোপ (Tariff War) করা হবে। অন্যদিকে, অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে শুল্ক সাময়িকভাবে ১০%-এ নামিয়ে আনা হয়। চীনও পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর ১২৫% পর্যন্ত শুল্ক বসায়।
গত মাসে সুইজারল্যান্ডে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দু’দেশ সাময়িকভাবে কিছু ট্যারিফ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে সেই চুক্তিও এখন ঝুঁকির মুখে।
এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে, তারা কিছু চীনা ছাত্রের ভিসা বাতিল করার কাজ শুরু করবে, বিশেষত যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি বা সেনাবিষয়ক বিষয়ে পড়াশোনা করছে। এই সিদ্ধান্তে চীন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি চিপস রপ্তানিতে নতুন বিধিনিষেধও জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যার পেছনে তাদের যুক্তি “জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা”। কিন্তু চীন একে দেখছে “শাস্তিমূলক পদক্ষেপ” হিসেবে।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প-শি ফোনালাপ অনেক গুরুত্ব বহন করছে। যদিও উভয় পক্ষের বক্তব্যে কোনো স্পষ্ট চুক্তির আভাস মেলেনি, তবুও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দু’পক্ষের এই সংলাপ নতুন করে আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারে।