ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। টানা এক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিতে দেশজুড়ে নেমেছে হড়পা বান ও ভূমিধস। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, চাষের জমি—সব মিলিয়ে জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। শুক্রবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, অফিস এবং রেল পরিষেবা (Cyclone Ditwah)। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসেব অনুযায়ী এই বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৬ জন, ঘরছাড়া হয়েছেন ২০০০-রও বেশি মানুষ।
এই দুর্যোগের মূলে রয়েছে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তা এবং বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সাইক্লোন দিতওয়াহা। Cyclone Ditwah শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলের উপর দিয়ে তৈরি হয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। কলম্বো সহ দেশের একাধিক নিচু অঞ্চলের বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত অতিবৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে সে দেশের আবহাওয়া দফতর (Cyclone Ditwah)।
সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাদুল্লা জেলায়। সেখানে ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২১ জন। নুওয়ারা এলিয়াতে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪ জনের (Cyclone Ditwah)। এখনও পর্যন্ত ১৮০০-রও বেশি মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, হড়পা বানে আস্ত রাস্তাঘাট ভেসে যাচ্ছে, ভেঙে পড়ছে ঘরবাড়ি। মিলিটারি ও নৌসেনা হেলিকপ্টার ও বোটের মাধ্যমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। প্রায় ২০ হাজার ৫০০ সেনা নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলায়।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি শ্রীলঙ্কার মানুষের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করেছেন এবং সবরকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে অপারেশন সাগরবন্ধু। ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর পাশাপাশি পাঠানো হচ্ছে ভারতের শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ INS Vikrant।
এদিকে ভারতের দিকেও বাড়ছে আশঙ্কা। মৌসম ভবন জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা উপকূল ছেড়ে সাইক্লোন দিতওয়াহা এবার উত্তর তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির দিকে এগিয়ে আসছে। আগামী ৩০ নভেম্বর ভোরের মধ্যে এটি অন্ধ্র-তামিলনাড়ু উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। উপকূলবর্তী এলাকার মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ক্রমশ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দক্ষিণ ভারতের উপকূলবর্তী এলাকাতেও।












