চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দালিয়ান পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় এক ছাত্রীকে (China student) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে, কারণ তিনি নাকি এক বিদেশি পুরুষের সঙ্গে ‘অনুচিত সম্পর্ক’ স্থাপন করে দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন। এ সিদ্ধান্ত ঘিরে চীনের সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক, যেখানে প্রশ্ন উঠেছে — ব্যক্তিগত সম্পর্ক কি আদৌ জাতীয় সম্মানের বিষয়?
বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া ‘অপরাধমূলক আচরণ’-এর জেরে ছাত্রীকে (China student) ৬০ দিনের মধ্যে বহিষ্কার করা হবে। যদিও এই ‘অপরাধ’ ঠিক কী ছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত বিবৃতিতে (China student) বলা হয়েছে, ‘‘তোমার আচরণ চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং জাতীয় মর্যাদাকে আঘাত করেছে।’’
এই বহিষ্কারের খবরে চীনের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম শিয়াওহংশু ও দোউইনে হাজার হাজার মন্তব্য ভেসে উঠেছে (China student)। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কেন একজন নারীর ব্যক্তিগত সম্পর্ককে এমনভাবে জাতীয় ইস্যু বানাচ্ছে?’’ আবার কেউ বলছেন, ‘‘একজন পুরুষ ছাত্র যদি বিদেশিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন, তবে কি তাকেও জাতীয় গর্ব বলা হতো?’’
ঘটনার সূত্রপাত ইউক্রেনের প্রো গেমার ড্যানিলো টেসলেনকো ওরফে জিউস-এর কয়েকটি ভিডিও ঘিরে (China student)। ভিডিওগুলোতে তাকে একটি হোটেল রুমে এক এশীয় নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সেই নারীই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। যদিও ভিডিওর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি, এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ছাত্রীটির পরিচয় গোপন রেখেছে গোপনীয়তার স্বার্থে।
জিউস পরে এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ একটি পোস্টে স্বীকার করেন যে, তিনি শাংহাইয়ে দেখা হওয়া এক তরুণীর সঙ্গে কিছু ভিডিও টেলিগ্রামে শেয়ার করেছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সেগুলো মুছে ফেলেন। তিনি লেখেন,
“আমাদের মুখ দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু তাতে কোনো অশালীন বা অসম্মানজনক কিছু ছিল না। আমি কখনো বলিনি চীনা মেয়েরা ‘সহজ’।”
তবে বিষয়টি এখানেই থেমে নেই। সাংহাইয়ের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম The Paper জানিয়েছে, ওই ছাত্রীর নাম প্রকাশ করা শুধু ‘অনুচিত’ নয়, বরং চীনের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের লঙ্ঘনও হতে পারে। তারা লিখেছে, ‘‘ব্যক্তিগত সম্পর্ককে জনসমক্ষে এনে জন বিচারের বিষয় বানানো নৈতিকতাবিরোধী।’’
গোটা ঘটনাটি আধুনিক চীনা সমাজে নারীর অধিকার, জাতীয়তাবাদ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে। একপক্ষ বলছে, ‘‘এটা তালিবানি মানসিকতা— যেখানে নারীর শরীর রাষ্ট্রের সম্পত্তি হয়ে যায়।’’
বিশ্ববিদ্যালয়কে মেইল করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।