৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত (Stock Market)। এই সফল সামরিক অভিযানের পর থেকেই প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির শেয়ার মূল্যে ব্যাপক উত্থান দেখা যাচ্ছে (Stock Market)। ১০ মে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করলেও, তার আগেই দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। (Stock Market) তাতে পাকিস্তানের একাধিক সামরিক ঘাঁটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে (Stock Market)।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রতিরক্ষা স্টকগুলি বাজারে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। বুধবার (১৪ মে) একদিনেই প্রতিরক্ষা খাতের শেয়ারগুলিতে সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
এই প্রবণতা অবশ্য নতুন নয়। ২০১৬ সালে উরির ঘটনার পর ভারতীয় সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময়, ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (BEL)-এর শেয়ার ছয় মাসে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের সময়ও একই চিত্র দেখা গিয়েছিল— HAL-এর শেয়ার প্রায় ২৫% এবং BEL-এর শেয়ার ৪০% বেড়ে যায়।
২০২৪ সালের নভেম্বরে চালু হওয়া ‘নিফটি ডিফেন্স ইনডেক্স’ বিগত এক মাসে নিফটি ৫০ সূচকের তুলনায় দ্বিগুণ রিটার্ন দিয়েছে। নিফটি ডিফেন্স যেখানে ১৮% বেড়েছে, নিফটি ৫০ সেখানে মাত্র ৮%। এটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে, প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কতটা বেড়েছে।
এদিকে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থেমে যাওয়ায় ধস নেমেছে চীনের প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির শেয়ারে। পাকিস্তানের ওপর নির্ভর করে থাকা এই সংস্থাগুলি যুদ্ধবিরতির খবরে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) হংকংয়ের ‘হ্যাং সেন চায়না এ অ্যারোস্পেস অ্যান্ড ডিফেন্স ইনডেক্স’ ২.৯% পড়ে যায়।
চীনের এভিআইসি চেংডু এয়ারক্রাফ্ট ও ঝুজহৌ হোংদা ইলেকট্রনিকস কর্প— এই দুই বড় সংস্থা যথাক্রমে ৯.২% ও ৬.৫% হারে পতনের মুখে পড়ে। অথচ এর আগের দিন, ৮ মে AVIC চেংডু-এর শেনঝেন তালিকাভুক্ত শেয়ারে ১৬% পর্যন্ত লাফ এবং AVIC অ্যারোস্পেসের হংকং তালিকাভুক্ত শেয়ারে ৬% বেড়ে গিয়েছিল। ঝুজহৌ হোংদা, যারা PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে এবং যা পাকিস্তান ব্যবহার করেছে বলে দাবি, তারাও ওইদিন উল্লেখযোগ্য লাভ করেছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে চীন পাকিস্তানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হতে পারত— এমন প্রত্যাশা থেকেই এই চীনা প্রতিরক্ষা স্টকগুলি আগের দিন পর্যন্ত চড়ছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতির ঘোষণা বাজারের সেই আশার অবসান ঘটায়। ফলে চীনা প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে।
সংক্ষেপে বলা যায়, একদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা সেক্টর এই সময়ে বাজারে আস্থা অর্জন করেছে, অন্যদিকে চীনের অস্ত্রশিল্প এই সংঘর্ষের হঠাৎ ইতি টানার ফলে বড় ধাক্কা খেয়েছে। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিনিয়োগের গতিপথ যে কতটা দ্রুত পাল্টাতে পারে, এই ঘটনাই তার বড় প্রমাণ।