যুক্তরাষ্ট্রের এক সরকারি কর্মীকে চীনে (China) আটকে দেওয়ার অভিযোগে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক। মার্কিন সরকারের দাবি, চীন (China) ইচ্ছাকৃতভাবে ওই কর্মীকে দেশে ফিরতে দিচ্ছে না। বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় কূটনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন পেটেন্ট ও ট্রেডমার্ক অফিসের এক কর্মী (যিনি মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের আওতায় কর্মরত) ব্যক্তিগত কারণে চীন (China) সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার ভিসা আবেদনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চাকরির বিষয়টি গোপন রাখার অভিযোগ ওঠে। এর পরপরই চীন (China) তাকে দেশে ফিরতে বাধা দেয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং চীনা (China) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।” যদিও আটককৃত কর্মীর নাম প্রকাশ করা হয়নি, ধারণা করা হচ্ছে তিনি মাস কয়েক আগে পরিবারকে দেখতে চীন গিয়েছিলেন।
চীনা কর্তৃপক্ষ তার অতীত সামরিক অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য তথ্য জানতে পেরে সন্দেহে পড়ে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় মূলত তার মার্কিন সেনাবাহিনীতে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার মেরামতের দায়িত্ব, পুয়ের্তো রিকোর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা এবং চীনের একটি পারমাণবিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পূর্বে কর্মরত থাকার বিষয়গুলো ঘিরেই সন্দেহ প্রকাশ করে চীন।
এমনকি, মার্কিন এক সিনিয়র কূটনীতিক ও এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা গত ১ মে চীনের চেংদু শহরে ওই কর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে তিনি “গভীর নজরদারির” মধ্যে রয়েছেন বলে জানানো হয়।
এটি চীনের ‘এক্সিট ব্যান’ কৌশলের সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন কখনও কখনও কৌশলগত কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য বিদেশি নাগরিক বা নিজ দেশের লোকদের বিদেশে যেতে বাধা দেয়—আইনি জটিলতা বা তদন্তের অজুহাতে।
এই ঘটনা একক নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন ও ওয়েলস ফারগো ব্যাংকের কর্মী চেন্যুয়ি মাও-ও চীন ত্যাগে বাধা পেয়েছেন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তিনি একটি ফৌজদারি মামলায় সহযোগিতা করছেন। এরপরই ওয়েলস ফারগো সব কর্মীদের চীন সফর স্থগিত করেছে।
চীন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক ট্রেড ও প্রযুক্তি যুদ্ধকে ঘিরে চরম উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। মালয়েশিয়া সফরের সময় মার্কো রুবিও মন্তব্য করেন, “খুব সম্ভবত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ বছরই মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন।”