মার্কিন রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী, জনপ্রিয় সমাজকর্মী এবং টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-র প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ক (Charlie Kirk) মঞ্চেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আমেরিকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে আলোচনার (Charlie Kirk)।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন চার্লি কার্ক (Charlie Kirk)। ঠিক সেই সময় হঠাৎ গুলি চলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, মঞ্চে দাঁড়িয়ে যখন আমেরিকায় বাড়তে থাকা বন্দুকবাজি ও গণ-গুলিচালনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে শুরু করেছিলেন কার্ক (Charlie Kirk), তখনই এক বন্দুকধারী তাঁর দিকে গুলি চালায়। গুলি গিয়ে লাগে তাঁর ঘাড়ে। মুহূর্তেই তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আতঙ্কে চিৎকার শুরু হয় হলভর্তি দর্শকদের মধ্যে, আর দর্শকাসনে বসে ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।
ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে সেই ভয়াবহ দৃশ্য— গুলির আঘাতে নিজের ঘাড় চেপে ধরার চেষ্টা করছেন কার্ক, তারপর আর সামলাতে না পেরে পড়ে যাচ্ছেন মাটিতে। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেও, পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
বন্ধু ও সহযোগীকে হারিয়ে শোকাতুর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন বার্তায় তিনি লিখেছেন— “আমেরিকার যুব সমাজকে চার্লির মতো আর কেউ বোঝেনি। সবাই ওঁকে ভালোবাসত, বিশেষ করে আমি। আজ ও আমাদের সঙ্গে নেই। চার্লি, উই লাভ ইউ।” শুধু তাই নয়, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন— রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারা আমেরিকায় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে চার্লি কার্কের স্মৃতিতে।
ইতিমধ্যেই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই। সংস্থার ডিরেক্টর কাশ প্যাটেল জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত চলছে, হামলাকারীর উদ্দেশ্য কী ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মাত্র ৩০-এর কোটায় থাকা চার্লি কার্ক মার্কিন সমাজে পরিচিত নাম। তিনি ছিলেন একাধারে রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী, লেখক ও মিডিয়ার জনপ্রিয় মুখ। তাঁর টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ সংগঠন আমেরিকার যুব সমাজকে রক্ষণশীল মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে বড় ভূমিকা পালন করেছে। প্রায়ই টেলিভিশন বিতর্ক, পডকাস্ট এবং বইয়ের মাধ্যমে তিনি রাজনীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে সরব হতেন। তাঁর অকাল মৃত্যু আমেরিকার ডানপন্থী রাজনৈতিক শিবিরে বিরাট ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চার্লি কার্কের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে প্রশ্ন উঠছে— প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পর এবার কি তাঁর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগীরাও বন্দুকবাজদের নিশানায়? আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে উদ্বেগ, আর জনসাধারণের মনে একটাই প্রশ্ন— কে আছেন পরের টার্গেটে?