পাকিস্তানের (Pakistan) উত্তর ওয়াজিরিস্তানে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারালেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৩ সদস্য। এই মর্মান্তিক ঘটনার দায়ভার ঘুরিয়ে ভারতের উপর চাপাতে চেয়েছিল ইসলামাবাদ (Pakistan) , কিন্তু কড়া ভাষায় সেই দাবি খারিজ করে দিল নয়াদিল্লি।
শনিবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি আচমকা ধাক্কা মারে সেনাবাহিনীর একটি কনভয়ের উপর। সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে মুহূর্তের মধ্যে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান ১৩ সেনা। আহত হয়েছেন আরও ১০ সেনা সদস্য এবং অন্তত ১৯ জন সাধারণ মানুষ। স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি।
বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে হাফিজ গুল বাহাদুর গোষ্ঠীর আত্মঘাতী স্কোয়াড (Pakistan) । এই সংগঠন সরাসরি জড়িত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সঙ্গে, যাদের কার্যকলাপ বহুদিন ধরেই পাকিস্তানের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার পরপরই পাকিস্তান (Pakistan) সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে আঙুল তোলে ভারতের দিকে। দাবি করে, এই হামলার পেছনে ‘ভারতের হাত থাকতে পারে’। তবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একেবারে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং প্রাপ্য অবজ্ঞা সহকারে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “পাকিস্তানের (Pakistan) সেনা যে বিবৃতি দিয়েছে তা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং পাকিস্তানের নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ভারতকে টেনে আনার একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা।”
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান শাসনের প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জঙ্গি হামলার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে বারবার হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। পাকিস্তান একাধিকবার আফগানিস্তানের উপর অভিযোগ এনেছে, তারা নাকি এই জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। তবে কাবুল বরাবরই তা অস্বীকার করেছে।
এএফপি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এখনও পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে প্রায় ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাঁদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। আর এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান উঠে এসেছে ‘গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স’-এর দ্বিতীয় স্থানে। গত এক বছরে দেশটিতে জঙ্গি হানায় মৃত্যু বেড়েছে ৪৫ শতাংশ, মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,০৮১ জনে।
এই জঙ্গি হানায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দেশজুড়ে। সেই সঙ্গে, বারবার ভারতের নাম টেনে আঞ্চলিক উত্তেজনা তৈরি করার পাকিস্তানের প্রবণতা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে।