প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা (Barack Obama)সম্প্রতি আমেরিকার গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক গুরুতর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি (Barack Obama) বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন এক বিপজ্জনক মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নয়, বরং স্বৈরতন্ত্রের আচরণ স্বাভাবিক হয়ে উঠছে।
হার্টফোর্ডে এক প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে ওবামা (Barack Obama) বলেন, বর্তমানে যা ঘটছে তা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের সঙ্গে খাপ খায় না। বরং এটি হাঙ্গেরির নেতা ভিক্টর অরবানের শাসন ব্যবস্থার মতো, যেখানে নির্বাচন হয় ঠিকই, কিন্তু ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নেই।
তিনি ইঙ্গিত করেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে হোয়াইট হাউস গণতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে খুব দুর্বল ভূমিকা নিয়েছে। ওবামা (Barack Obama) বলেন, এখনও আমেরিকা পুরোপুরি সেই সীমা অতিক্রম করেনি, কিন্তু খুব কাছাকাছি চলে এসেছে যেখানে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণকেই স্বাভাবিক বলে মেনে নেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে উদার গণতন্ত্রের মূল্যবোধ গড়ে উঠেছিল, যেমন প্রশাসনিক ভারসাম্য, ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব—তা এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে।

ওবামা (Barack Obama) আরও বলেন, শুধু আন্দোলন বা প্রতিবাদ করে গণতন্ত্র রক্ষা করা যায় না, সরকারের ভিতরেও এমন মানুষ থাকতে হবে যারা স্পষ্টভাবে বলতে পারেন, “না, এটা করা যাবে না।” দুই দলের প্রতিনিধিদেরই গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার রক্ষা করার দায়িত্ব আছে।
নিজের কিছুটা নিস্ক্রিয়তা নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, সে প্রসঙ্গেও ওবামা বলেন, তিনি এখনও আশাবাদী। “আমি এখনও সেই ‘হোপ’ মানে আশার মানুষ।” তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ—একদিকে যেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাগ থাকে, আবার অন্যদিকে বাস্তবতাও মানতে হবে। “পরিবর্তন আনতে গেলে শুধু বিরোধিতা নয়, সবাইকে একত্রে আনতে হয়,” বলেন তিনি।
শেষে বারাক ওবামা আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের একটি বিখ্যাত বক্তব্য উদ্ধৃত করেন—“আমাদের ভেতরের ভালো দিক, সেই ‘better angels’—তাদের ডাক শোনার এটাই সময়।” তিনি বলেন, “যখন মানুষ একসঙ্গে কাজ করে, পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত হয়, তখনই তৈরি হয় গণতন্ত্রের আসল ভিত্তি এবং আমাদের ভবিষ্যতের রক্ষা কবচ।”