বাংলাদেশ ফের অগ্নিগর্ভ। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর থেকেই উত্তেজনা তুঙ্গে (Bangladesh)। সেই রায়ের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে বিস্ফোরণ—৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ির সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সেনার ভয়াবহ সংঘর্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ির ধ্বংসাবশেষ ভাঙতে বুলডোজার পাঠানো মাত্রই ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা (Bangladesh)। মুহূর্তে এলাকায় আগুন জ্বলে ওঠে। রাস্তায় টানা অবস্থান, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, ইটবৃষ্টি—সমস্তই মিশে যায় তীব্র অরাজকতায়।
সেনাবাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও লাভ হয়নি (Bangladesh)। বিক্ষোভকারীরা বুলডোজারের সামনে ঢুকে পড়ে দেয়াল হয়ে। সেনা তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা শুরু করলে সংঘর্ষ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সাতটি জেলায় ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি। রাজধানী ঢাকাতেও টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডে আকাশ ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। সোমবার সকালে পুলিশ যখন ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়তে শুরু করে, তখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে সেখানে টানা লাঠিচার্জ ও সেনা পাহারা দেওয়া হয় (Bangladesh)।
ঢাকা সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীদের এক দল বুলডোজার নিয়ে জোর করে ঢুকে পড়ে বাড়ির ধ্বংসাবশেষ ভাঙার জন্য। পুলিশ বাধা দিতেই দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি থেকে বড় ধরনের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনাস্থলে সেনা নামানো হলে উত্তেজনা চরম আকার নেয়।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘিরে দেশজুড়ে উত্তাল পরিবেশ। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ, উস্কানি, নিষ্ক্রিয়তা ও হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ শাস্তি—ফাঁসির সাজা—দিয়েছে আদালত। একটি মামলায় তাঁকে যাবজ্জীবন এবং তিনটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের দাবি, প্রমাণ এতটাই শক্তিশালী যে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।
একই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসির সাজা পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় তুলনামূলক কম সাজা হয়েছে প্রাক্তন আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের। বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে আরও একটি কারণে—শেখ হাসিনা নাকি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগই পাননি। এই অভিযোগে দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিবাদ এবং প্রশ্ন তোলা হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি বাংলাদেশকে ভয়ঙ্কর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আগুন, রক্ত, সংঘর্ষ—সব মিলিয়ে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে অস্থির পরিবেশ। ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িকে কেন্দ্র করে এই ক্ষোভ আরও বেড়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা।












