বিজয় দিবসের প্রাক্কালে প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে উঠে এল চরম উসকানিমূলক মন্তব্য (Bangladesh)। প্রথমে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধান মহম্মদ ইউনূসের বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বাংলাদেশের (Bangladesh) এক রাজনৈতিক নেতার মুখে ভারতের উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যকে আলাদা করে দেওয়ার হুমকি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। বিষয়টি আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে কারণ ১৬ ডিসেম্বর সারা দেশে পালিত হচ্ছে বিজয় দিবস, যে দিনে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল ভারত (Bangladesh)।
বিজয় দিবসের ঠিক আগের দিন ঢাকার (Bangladesh) শহিদ মিনার চত্বরে ভাষণ দিতে গিয়ে বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, প্রয়োজনে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলিকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হবে এবং সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়া হবে। তিনি (Bangladesh) আরও দাবি করেন, শেখ হাসিনাকে যারা আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে, তাদের উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার। তাঁর এই বক্তব্যে উপস্থিত জনতা হাততালিতে ফেটে পড়ে। সেই ভিডিও দ্রুতই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা শুরু হয়েছে ভারতে। ভারতের উত্তর-পূর্বের অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরাকে একসঙ্গে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। এই সাতটি রাজ্যের মধ্যে চারটি রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আগেও একাধিকবার এই সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও পাচারের বিষয়ে সতর্ক করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিক থেকেই উত্তর-পূর্ব ভারতে সক্রিয় একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ঘাঁটি গড়ে তোলে। অস্ত্র, টাকা ও জঙ্গিদের চলাচলের জন্য বাংলাদেশকে নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ত্রিপুরায় এনএলএফটি ও অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্সের মতো সংগঠনের সঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গিদের যোগাযোগের কথা বহুবার উঠে এসেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশি কট্টরপন্থীদের যোগাযোগও বেড়েছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। হরকত-উল-জিহাদ-অল-ইসলামি বা জেএমবি-র মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি বাংলাদেশ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের এক নেতার প্রকাশ্য হুমকি নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের বক্তব্য কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে অন্তর্বর্তী প্রধান মহম্মদ ইউনূস চিন সফরে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতকে ‘ল্যান্ডলকড’ বলে মন্তব্য করেছিলেন, যা নিয়ে ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। ইউনূসের সেই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা হয়েছিল দেশ-বিদেশে। শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ ভারতকে চিঠিও পাঠিয়েছে, যদিও ভারত সেই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। এই নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।










