ঢাকার (Bangladesh) উত্তরা এলাকায় মিলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনের উপর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ফাইটার জেট বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু—এই মর্মান্তিক তথ্য নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ উপদেষ্টা সাইদুর রহমান।
সোমবার দুপুরে চিনের নির্মিত এফ-৭ বিএজিআই নামক প্রশিক্ষণ বিমানটি (Bangladesh) উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার হয়ে দুইতলা স্কুল ভবনের ওপর ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনাটি ঘটে ঢাকার (Bangladesh) দিয়াবাড়ি এলাকার ব্যস্ত সময়ে, যখন মিলস্টোন স্কুলে শ্রেণি চলছিল। শিশুদের চিৎকার আর আগুনের হলকা মুহূর্তেই গোটা এলাকা আতঙ্কে পরিণত করে।
দুর্ঘটনার সময় স্কুলে (Bangladesh) থাকা অনেক শিশু মারাত্মক দগ্ধ হয়। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকেই মারা গেছেন। এখনো ১৭০ জনের বেশি আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরও মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।
একাধিক হাসপাতালে (Bangladesh) এখন কান্না, হতাশা ও হৃদয়বিদারক দৃশ্য। অনেকে এখনও তাঁদের সন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কেউ হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়াচ্ছেন, কেউ অপেক্ষা করছেন ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের বাইরে স্তব্ধ হয়ে।
বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ তাওকির ইসলামও এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (ISPR) জানিয়েছে, তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলেন জনবহুল এলাকা এড়িয়ে ফাঁকা জায়গায় বিমানটি নামাতে, কিন্তু ব্যর্থ হন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। এর আগে ১৯৮৪ সালে ঢাকায় একটি যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনায় ৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
সরকার মঙ্গলবারকে শোক দিবস ঘোষণা করেছে। দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হচ্ছে।
ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একইসঙ্গে দ্রুত আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার এবং অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে তাঁদের সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
দেশজুড়ে শিশুদের মৃত্যু, পিতামাতার কান্না, হাসপাতালের করুণ দৃশ্য—সব মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডির সাক্ষী।