যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস হওয়ার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই (Khamenei) এখন একটি গোপন নিরাপদ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। তাঁর সমস্ত ইলেকট্রনিক যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে—যাতে সম্ভাব্য গুপ্তহত্যার হাত থেকে বাঁচা যায় (Khamenei)।
এই পরিস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে (Khamenei)। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ইরানের কী পদক্ষেপ হবে—তা এখনো স্পষ্ট নয়, যতক্ষণ না খামেনেই নিজে জনসমক্ষে আসেন এবং বক্তব্য রাখেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, খামেনেই (Khamenei) বা অন্যান্য শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা যদি ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হন বা প্রাণ হারান, তাহলে এই নেতৃত্বশূন্যতায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড (IRGC) কিংবা সেনাবাহিনীর চরমপন্থী অংশ কর্তৃত্ব নিতে পারে। যা ইরানের ভবিষ্যতের জন্য অস্থিতিশীলতা বয়ে আনবে।
গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে খামেনেই (Khamenei) নেতৃত্ব রক্ষায় গ্রহণ করেছেন নজিরবিহীন কিছু পদক্ষেপ। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, সম্ভাব্য হত্যার আশঙ্কায় তিনি ইতিমধ্যে তিনজন প্রবীণ ধর্মীয় নেতাকে (Khamenei) উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেছেন। বিস্ময়করভাবে, তাঁর পুত্র মোজতবা খামেনেই এই তালিকায় নেই—যা আগের ধারণাকে খণ্ডন করে।
খামেনেই (Khamenei) শুধু উত্তরসূরি নির্বাচনেই থেমে থাকেননি। ইসরায়েলি হামলায় নিহত সেনা কমান্ডারদের জায়গায় নতুন নেতৃত্বও বেছে নেওয়া শুরু করেছেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে তিনি সংকটকালে নেতৃত্বে কোনো শূন্যতা না রাখতে চাইছেন।
এমনকি তিনি সরাসরি ‘অ্যাসেম্বলি অব এক্সপার্টস’—যারা পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করে—তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তার মনোনীত নামের মধ্য থেকেই দ্রুত একজনকে বেছে নেওয়া হয়, যাতে নেতৃত্ব হস্তান্তর দেরি না হয়। সাধারণত এই প্রক্রিয়া মাসব্যাপী চলে, কিন্তু বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তিনি তা ত্বরান্বিত করতে চান।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরান বিশেষজ্ঞ ভালি নাসর দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-কে বলেন, “এই মুহূর্তে ইরান সরকার সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় টিকে থাকার ওপর।” খামেনেই নিজেও বলেছেন, যদি তাঁর মৃত্যু আসে, তবে তিনি শহীদত্বকে বরণ করতে প্রস্তুত।
এই সংকটময় সময়ে ইরানের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক রাজনীতির গতি প্রকৃতি এখন সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করছে খামেনেই-এর সিদ্ধান্তের ওপর।