মধ্যপ্রাচ্য উত্তাপে মুখ থুবড়ে পড়ে গেল বিশ্বের কুটনীতিক অঙ্গন (Iran)। শনিবার স্থানীয় সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করে ইরানের (Iran) তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় — ফর্ডউ, নাতান্জ ও ইসফাহান — “অত্যন্ত সফল” হামলা চালানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম Truth Social-এ জানান, হামলায় প্রধান লক্ষ্য ছিল ফর্ডউ। তিনি লিখেছেন, “এবার সব বিমান নিরাপদে দেশে ফিরছে। আমাদের অসাধারণ মার্কিন যুদ্ধবীরদের অভিনন্দন। বিশ্বের আর কোনও সামরিক বাহিনী এটি করতে পারতো না। এখনই শান্তির সময়!”
ট্রাম্প বলেন, এই কর্মী অভিযান ইরানকে আবার পারমাণবিক আলোচনা টেবিলে ফিরিয়ে আনবে, এবং তিনি আপাতত ইরানের (Iran) ভিতরে আর কোনো অতিরিক্ত হামলার পরিকল্পনা করছেন না । তবে তিনি একইসঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি ইরান শান্তি না চায়, ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক হামলা হবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঐতিহাসিক সময়ে—মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির সম্ভাবনা—বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান ।
আমেরিকার B‑2 বোম্বার ছয়টি প্লেন ব্যবহার করে ‘bunker-buster’ ধরণের GBU‑57 Massive Ordnance Penetrator ব্যবহার করে ফর্ডউতে হামলা চালানো হয়। ফর্ডউ প্রাচীরের ভিতরে ভিলম্ব ভবন, যেখানে কেন্দ্রীভূত পারমাণবিক কার্যক্রম চলে—সেখানেই এই মারাত্মক আঘাত হানা হয়েছে। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে বলা হয়েছে, ইসরাইলও ফর্ডউকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছে, তবে সেটা সক্ষম হয়নি; কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে B‑2 প্লেনের বিশাল বোমার ছোঁয়া ছাড়া সম্ভব নয় ।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এসেছে ট্রাম্পের পূর্ব ঘোষণা—ইরানকে (Iran) পারমাণবিক ক্ষেত্রে চূড়ান্ত দুশো দিন সময় মিলেছিল, কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল । যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরও বিভক্ত—কিছু কনজার্ভেটিভ নেতা আক্রমণের পক্ষে, তবু ট্রাম্প নিজে ‘শান্তি অর্জনের চাবি’ নিয়েও বলেন ।
বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা ও পারমাণবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ ও নিউক্লিয়ার এজেন্সি এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের বস্ট্রুকচারগুলোতে ধ্বংসাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, তবে পরিবেশগত ঝুঁকি নিয়েও ভাবতে হবে ।
এদিকে ট্রাম্প আগামী রাত ১০টায় (ভারতীয় সময় ভোর ৭:৩০) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন এই ‘সাফল্য’ নিয়ে । তিনি একদিকে নিজেকে শান্তি-স্রষ্টা হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন, অন্যদিকে পারমাণবিক আলোচনার পথ খুলে দিয়ে জানাবেন, ইরান যে ‘ইতিহাসিক সময়ের মুখে’, যার সিদ্ধান্ত তার ওপর নির্ভর করছে।