ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (Taliban Minister) আমির খান মুত্তাকি ভারত সফরে এসে শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠক করেন। কিন্তু সেই বৈঠকে এক অদ্ভুত শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় — কোনও মহিলা সাংবাদিক সেখানে থাকতে পারবেন না।
এই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, তালেবান কি এখন ভারতের মাটিতেও তাদের নারী-বিরোধী নিয়ম চাপিয়ে দিতে চায় (Taliban Minister)?
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান (Taliban Minister) ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নারীদের স্বাধীনতা ভয়াবহভাবে খর্ব করা হয়েছে। মেয়েদের শিক্ষা, চাকরি, স্বাধীন চলাফেরা—সবকিছুতেই একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালেবান সরকার। তাই দিল্লির বুকে এমন ঘটনা ঘটায় অনেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
শুক্রবার নয়া দিল্লির আফগান দূতাবাসে ওই সাংবাদিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কোনও মহিলা সাংবাদিককে (Taliban Minister) ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বেশ কয়েকজন মহিলা রিপোর্টার চেষ্টা করলেও নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটকে দেন। উপস্থিত সাংবাদিকদের অনেকে জানিয়েছেন, মহিলা সহকর্মীরা শালীন পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছিলেন, তবুও তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাংবাদিকদের ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
বিরোধী নেতারা এই ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে তীব্র নিন্দা করেছেন। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ট্যাগ করে প্রশ্ন তোলেন,
“মোদীজি, এই ঘটনার ব্যাপারে আপনার অবস্থান কী? আমাদের দেশের সবচেয়ে যোগ্য ও পরিশ্রমী নারীদের এমন অপমান হতে দেওয়া হলো কেন?” প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরমও বলেন, “যদি কোনও প্রেস মিটে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া হয়, তবে অন্য সাংবাদিকদেরও উচিত ছিল সেই বৈঠক বয়কট করা।”
বিতর্ক তীব্র হওয়ার পর শনিবার কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাফাই দেওয়া হয়। বিদেশ মন্ত্রক (MEA) জানায়,
“আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই সাংবাদিক বৈঠকের সঙ্গে ভারতের সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। অংশগ্রহণকারীদের তালিকা পাঠানো হয়েছিল আফগান কনস্যুলেটের মাধ্যমে, যা ভারতের সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।” সরকারের এই ব্যাখ্যা দিলেও, বিরোধীদের প্রশ্ন এখনো রয়ে গেছে — “ভারতের মাটিতে কিভাবে তালেবানি রীতি মানা হলো?”