সোশ্যাল মিডিয়ায় এক হাসিখুশি, প্রাণবন্ত নারী—গোলিয়রের পূজা জাটব। ইনস্টাগ্রাম-ফেসবুকে যাঁর ছবিতে ভরে থাকত অনুরাগীদের টাইমলাইন, সেই পূজার বাস্তব জীবনের গল্প যেন কোনও থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানায় (Murder)। একটি ব্যর্থ বিয়ে, খুনের চেষ্টা, নিষিদ্ধ প্রেম এবং সম্পত্তি দখলের লড়াই—সব মিলিয়ে এক ভয়ানক বাস্তব উঠে এসেছে এই ভাইরাল মুখের আড়ালে (Murder)।
পূজার জন্ম হয় মধ্যবিত্ত এক পরিবারে। বাবা ছিলেন ভারতীয় রেলের লকো পাইলট (Murder)। ২০১৪ সালে তাঁর বিয়ে হয় মধ্যপ্রদেশের ওর্ছার রেলকর্মী রমেশের সঙ্গে। প্রথমে সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন পরেই শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। সম্পর্কে ভাঙন এমন জায়গায় পৌঁছয় যে পূজা নিজের স্বামীকে খুন করতে সুপারি দেয়! তবে রমেশ অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান এবং পূজার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন (Murder)।
এই মামলার শুনানির সময় পূজার সঙ্গে আলাপ হয় ঝাঁসির কুমহারিয়া গ্রামের কুখ্যাত অপরাধী কল্যাণ ওরফে লক্ষণের। আদালত চত্বরে শুরু হয় সম্পর্ক, এবং কিছুদিনের মধ্যেই পূজা গোয়ালিয়র ছেড়ে লক্ষণের সঙ্গে ঝাঁসিতে গিয়ে লিভ-ইন করতে শুরু করেন (Murder)। তবে সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ২০১৯ সালের ২৫ মে এক সড়ক দুর্ঘটনায় লক্ষণের মৃত্যু হয়। নিঃসঙ্গ পূজা আবার ফিরে আসেন গ্বালিয়রে, বোন কামলার কাছে থাকতে শুরু করেন।
কিন্তু প্রেম যেন তাঁর পিছু ছাড়ে না। কিছুদিন পরেই আবার ফিরে যান ঝাঁসিতে এবং লক্ষণের পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। এইবার টার্গেট হন লক্ষণের বড় ভাই সন্তোষ। শুরু হয় তাঁদের সম্পর্ক এবং সেই সম্পর্কের ফসল হিসেবে জন্ম নেয় এক কন্যা সন্তান। এদিকে সন্তোষের স্ত্রী রাগিনী শুরুতে বিরোধিতা করলেও পরে সন্তানের মুখ দেখে কিছুটা নীরব হয়ে যান। কিন্তু ক্রমশ সন্তোষ পূজার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে এবং রাগিনীকে অবহেলা করতে থাকে। একসময় রাগিনী সমস্ত কিছু ফেলে বাপের বাড়ি ফিরে যান।
পরবর্তীতে পূজা আবার গ্বালিয়রে ফিরে যান মেয়েকে নিয়ে। সেখান থেকেই তিনি সন্তোষকে ফোন করে লক্ষণের অংশ হিসেবে থাকা ৮ বিঘা জমি দাবি করেন, যাতে তা বিক্রি করে নিজের ও মেয়ের ভবিষ্যৎ গড়তে পারেন। সন্তোষ ও তাঁর বাবা অজয় বিষয়টিতে রাজি হলেও লক্ষণের মা সুশীলা তীব্র আপত্তি জানান। তিনি কোনওভাবেই পারিবারিক জমি ভাগ করতে রাজি নন।
এই নাটকীয় ও জটিল কাহিনি এখন গ্বালিয়র ও ঝাঁসির দুই শহরেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। একসময় যাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘মডার্ন আইকন’ ভাবা হত, সেই পূজার বাস্তব জীবন যেন এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন।