৭ মে পহেলগাঁওয়ে কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন শহিদ হওয়ার পর ভারত “অপারেশন সিঁদুর” চালায়। ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী (থলসেনা, নৌসেনা, বিমানবাহিনী ও বিএসএফ) একযোগে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) নয়টি জঙ্গি শিবিরে নিখুঁত হামলা চালায় (Woman BSF Jawan)।
এই অভিযানে প্রথমবারের মতো বিএসএফ-এর মহিলা অফিসাররা (Woman BSF Jawan) আন্তর্জাতিক সীমান্তে দায়িত্ব পালন করেন। বিএসএফ-এর আইজি অভিষেক পাঠক গুজরাটের গান্ধীনগরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, পহেলগাঁও হামলার পর গোটা দেশের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়—এর জবাব দেওয়া হবে, তাও কড়া হাতে (Woman BSF Jawan)।
পাকিস্তানও ভারতীয় প্রস্তুতি দেখে সীমান্তে সেনা ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন বাড়িয়ে দেয়। গোয়েন্দা সংস্থাগুলির থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান নিজের সীমান্ত প্রতিরক্ষাকে বাড়িয়ে দেয়, ট্যাংক ও কামান এগিয়ে আনে।
এই পরিস্থিতিতে বিএসএফ-এর সাতজন মহিলা যোদ্ধা (Woman BSF Jawan) তাঁদের জীবন বাজি রেখে সীমান্তে পোস্ট সামলান। জম্মু ও কাশ্মীরের আখনূর সেক্টরে তাঁরা পাকিস্তানের গোলাগুলির সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ান তিন দিন ও তিন রাত।
এই মহিলাদলের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট নেহা ভাণ্ডারী। তিনি তিন বছর আগে বিএসএফ-এ যোগ দেন। সীমান্তের এত সামনের পোস্টে এই প্রথম কোনও মহিলা অফিসারকে মোতায়েন করা হয়। যেখানে এখনো সেনাবাহিনী মহিলা অফিসারদের এত সামনের লাইনে পাঠায় না।
এই দলটিকে “সীমা প্রহরী” বলা হচ্ছে। তারা এমন সাহসিকতা দেখিয়েছেন যে, পাক সেনারা বাধ্য হয়ে তাদের পোস্ট থেকে পিছু হটেছে।
নেহার সঙ্গে ছিলেন ছয়জন মহিলা কনস্টেবল—পাঞ্জাবের দুই অভিজ্ঞ জওয়ান মঞ্জিত কৌর ও মালকিত কৌর। তাঁরা একটি বাঙ্কার ও একটি নজরদারি পোস্ট সামলান। পশ্চিমবঙ্গের স্বপ্না রাঠ ও শম্পা বসাক, ঝাড়খণ্ডের সুমি জেস ও ওড়িশার জ্যোতি বাইনিয়ানের মতো নবীন সৈনিকরা প্রথমবারের মতো এত বড় সংঘর্ষের মুখোমুখি হন। কিন্তু তাঁরা পিছু হটেননি, বরং পাকিস্তানি ঘাঁটিগুলিতে পাল্টা হামলা চালিয়ে শত্রুদের দিক পরিবর্তন করতে বাধ্য করেন।
অ্যাক্টিভ ফায়ারিংয়ে এই মেয়েরা একটি মুহূর্তের জন্যও পিছিয়ে আসেননি। বুলেট চালিয়ে চালিয়ে তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেন যে, শত্রুপক্ষ পোস্ট ফেলে পালায়।
নেহা ভাণ্ডারী বলেন, “আমার পোস্টগুলো পাকিস্তানি পোস্ট থেকে মাত্র ১৫০ মিটার দূরে ছিল। আমি তিনটি এলাকা সামলেছি। প্রতিটি শত্রুপক্ষের দিকেই আমরা আমাদের সব অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছি। ওরা পালাতে বাধ্য হয়েছে।”
এই অভূতপূর্ব সফলতায় বিএসএফ-এর আইজি শশাঙ্ক আনন্দ বলেন, “মহিলা জওয়ানরা চাইলেই ব্যাটেলিয়ন হেডকোয়ার্টারে ফিরে যেতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা থেকে গেছেন। সোজাসুজি শত্রুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন। এই হলো প্রকৃত সাহস।”
এই মহিলা সৈনিকদের অবদান নিয়ে গোটা দেশ আজ গর্বিত।