জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পর্যটন কেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার (Terrorist Attack) দায় স্বীকার করল পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠন ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’। এই ঘটনায় (Terrorist Attack) অন্তত একজন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। আহতের সংখ্যা বেড়ে ২০-র বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে (Terrorist Attack) । তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বেসরকারি সূত্রে আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার পরপরই পহেলগাঁও এলাকায় তৎপর হয়ে ওঠে সেনা ও পুলিশ। সার্চ অপারেশন চালানো হচ্ছে জঙ্গিদের ধরতে। পাশাপাশি পহেলগাঁওতে পর্যটকদের প্রবেশ আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সন্ত্রাসী সংগঠনের বার্তা, টার্গেট ‘অ-স্থানীয়’ আবাসিকরা
ঘটনার দায় স্বীকার করে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ জানিয়েছে, নতুন আবাসিক আইন এবং অ-স্থানীয়দের দেওয়া আবাসিক কার্ডের বিরুদ্ধেই এই হামলা। সংগঠনের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই ৮৫ হাজারের বেশি আবাসিক কার্ড অ-স্থানীয়দের দেওয়া হয়েছে, যা কাশ্মীরের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করছে। তারা আরও হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, “যাঁরা অবৈধভাবে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করবে, তাঁদের বিরুদ্ধে এমন হামলা চলবে।”
সেনা-পুলিশের জবাব, জঙ্গিদের খুঁজে তল্লাশি অভিযান জারি
হামলার পরই গোটা এলাকা ঘিরে বিস্তৃত তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে সেনা ও কাশ্মীর পুলিশ। সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। আতঙ্কের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছে, সন্দেহজনক কোনও কিছু চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করার।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আইনি পরিবর্তনেই সন্ত্রাসীদের ক্ষোভ?
২০১৯ সালে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর, জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তার পরেই চালু হয় নতুন আবাসিক আইন, যার আওতায় অ-স্থানীয়রাও নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে আবাসিক কার্ড পেতে পারেন। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি সেই কারণেই ক্ষুব্ধ এবং তাদের দাবি, এটি কাশ্মীরের “আসল পরিচয় মুছে দেওয়ার চক্রান্ত।”
লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিক্রিয়া
কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এই হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেন,
“এই কাপুরুষোচিত হামলার দায়ীদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। সেনা, পুলিশ ও প্রশাসন যৌথভাবে অভিযানে নেমেছে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, গুরুতর আহত এক পর্যটককে ইতিমধ্যেই জিএমসি অনন্তনাগ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং বাকিদের চিকিৎসারও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।
বহু বছর পর ফের পর্যটকদের টার্গেট
বিগত বছরগুলোতে জম্মু ও কাশ্মীরে বহু সন্ত্রাসী হামলা ঘটলেও সাধারণত পর্যটকদের টার্গেট করা হত না। কিন্তু এই হামলা সেই ধারা ভেঙে এক নতুন আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি করল উপত্যকায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা শুধু নিরাপত্তার উপর নয়, কাশ্মীরের পর্যটন এবং স্থিতাবস্থার উপরেও বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল।