১৭ বছরের আরিয়ান আসারি একটা সাধারণ ভিডিও বানাতে চেয়েছিলেন — আকাশে উড়ে যাওয়া একটি বিমানের ভিডিও, যা বন্ধুদের দেখাতে পারবেন। কিন্তু সেই ভিডিওতে তিনি ধরে ফেলেন এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার (Plane Crash) দৃশ্য, যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয়।
ঘটনাটি ঘটেছে ১২ জুন, গুজরাটের আহমেদাবাদে (Plane Crash)। আরিয়ান সেদিনই এসেছিলেন তাঁর বাবার কাছে, যিনি সদ্য মেঘানিনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন। এই জায়গাটি বিমানবন্দর এবং দুর্ঘটনাস্থলের মাঝখানে অবস্থিত। বিকেলে খাওয়ার পর, আরিয়ান তাঁর বোন ও বন্ধু রাজ সিংয়ের সঙ্গে ছাদে ওঠেন। সেখানে তিনি দেখতে পান বিমানগুলো খুব নিচ দিয়ে উড়ছে। এক নতুন অভিজ্ঞতায় রোমাঞ্চিত হয়ে তিনি ভিডিও করা শুরু করেন।
আরিয়ান বলেন, “বিমানটা খুব কাছ দিয়ে যাচ্ছিল, তাই ভাবলাম ভিডিও করে রাখি বন্ধুদের দেখাবো। আমি ভাবলাম এটি ল্যান্ড করবে, কারণ বিমানবন্দর তো কাছেই। কিন্তু হঠাৎ দেখি নিচে নামতে নামতেই আগুন ধরে যায় (Plane Crash)। তারপর সেটা ফেটে গেল। আমি খুব ভয় পেয়ে যাই।” এই ভিডিওতে ধরা পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ বিমানের শেষ মুহূর্ত। লন্ডনগামী ফ্লাইট AI 171 টেক-অফ করার মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়, যাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন গুজরাট মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি।

আরিয়ান প্রথমে বুঝতে পারেননি ঠিক কী ঘটেছে (Plane Crash)। কিন্তু পরে যখন তিনি টিভি ও খবরের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তিনি দুর্ঘটনার শেষ মুহূর্ত ভিডিও করেছেন, তখন তাঁর মনে ভয় আর শোক একসঙ্গে ভর করে। তিনি বলেন, “রাতে ঘুমাতে পারিনি। যখন বুঝলাম আমি ওই প্লেনটার শেষ মুহূর্ত ভিডিও করেছি, তখন যেন বাস্তবটা আমার চোখে বিশ্বাস হচ্ছিল না।”
এই ঘটনায় আরিয়ান প্রচণ্ড মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তাঁর পরিবার জানায়, সে এতটাই আতঙ্কিত (Plane Crash) হয়ে পড়ে যে ভবিষ্যতে আর কখনো বিমান চড়বে না বলে জানিয়েছে। ১৪ জুন, আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ আরিয়ানকে ডেকে পাঠায়, কারণ তাঁর ভিডিওটি তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে। পুলিশ জানায়, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও আটক করা হয়নি।
রবিবার সকালে, বাড়ির জমিদারিনি কেলাশবেন ঠাকুর জানান, “ছেলেটা প্রথমবারের মতো শহরে এসেছিল, আর এসেই এমন একটা ঘটনা দেখতে হলো, যা জীবনে কেউ দেখতে চায় না।” তিনি আরও বলেন, এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর আরিয়ান সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে আবার গ্রামে ফিরে গিয়ে পড়াশোনা করবে।