তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) পুলিশ হেফাজতে অজিত কুমারের মৃত্যুর ঘটনায় যখন গোটা রাজ্য উত্তাল, ঠিক তখনই টিএমকে নেতা তথা অভিনেতা বিজয়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন ডিএমকে নেত্রী ও তুতিকোরিনের সাংসদ কানিমোঝি। সরাসরি নাম না করে কনিমোঝি একঝাঁজ মন্তব্য করেন, কিছু অভিনেতা সিনেমায় যেভাবে হেফাজতে মৃত্যুকে গৌরবান্বিত করেন, বাস্তবে রাজনীতিতে এসে সেই বিষয় নিয়েই মুখর হন—এটা নিছক ‘ভণ্ডামি’ বলেই ব্যাখ্যা করেন তিনি (Tamil Nadu)।
কানিমোঝি (Tamil Nadu) বলেন, “চলচ্চিত্র হলো এক তথ্যপ্রদ মাধ্যম। কিন্তু এমন অনেক অভিনেতা আছেন, যাঁরা সিনেমায় লকআপ ডেথ বা পুলিশি হিংসাকে রোমাঞ্চকরভাবে দেখিয়ে থাকেন। অথচ এখন রাজনীতিতে এসে সাধারণ মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখানোটা একেবারে হাস্যকর ঠেকে।”
এই মন্তব্যের সূত্রপাত বিজয়ের এক জোরালো বক্তব্য (Tamil Nadu) থেকে, যেখানে তিনি প্রকাশ্যে ডিএমকে সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। চেন্নাইয়ে টিভিকে-র (Tamilaga Vettri Kazhagam) প্রথম বড় মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অভিনেতা বিজয় বলেন, “এই সরকার ‘সরি মা’ মডেল হয়ে গেছে। প্রতিটি ঘটনায় শুধুই দুঃখপ্রকাশ! আদালত না থাকলে আপনাদের শাসন ব্যবস্থা কী করত?”
বিজয়ের (Tamil Nadu) কটাক্ষ ছিল, “অ্যানা ইউনিভার্সিটি থেকে অজিত কুমার—এত ঘটনায় শুধু ‘সরি’ বললেই চলবে না। যাঁরা হেফাজতে মারা গেছেন, তাঁদের পরিবারকে কি সবসময় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে? না হলে এবার দিন। অন্তত ক্ষমা চান।”
বিজয়ের প্রতিবাদ সভায় ছিল আবেগ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কালো জামা পরে ‘Sorry চাই না, ইনসাফ চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বক্তব্যে বারবার প্রশ্ন তোলেন—“আপনাদের শাসন ব্যবস্থা কোথায়? আদালত যদি সব কাজ করে দিচ্ছে, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়োজনই বা কী?”
অজিত কুমারের মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই বয়ে যাচ্ছে উত্তাল তরঙ্গ। ২৭ জুন সিভাগঙ্গার মদপুরম কালিয়াম্মান মন্দিরের নিরাপত্তারক্ষী অজিতকে পুলিশ গ্রেফতার করে এক সোনার গয়না চুরির মামলায়। পরদিনই খবর আসে, হাসপাতালে ‘মৃত অবস্থায়’ আনা হয়েছে তাঁকে। পুলিশ জানায়, অজিত মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সেই দাবিকে সম্পূর্ণ খারিজ করে দেয়। রিপোর্টে উঠে আসে শরীরে ৪৪টি ক্ষতের চিহ্ন, রক্তক্ষরণ ও অভ্যন্তরীণ আঘাতের প্রমাণ।
পরবর্তীতে মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ অজিতের মৃত্যুকে ‘হেফাজতে মৃত্যু’ বলে নিশ্চিত করে এবং নির্দেশ দেয়, এই ঘটনার তদন্তে সিবিআই নিয়োগ করতে হবে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে।
বিজয়ের এই প্রতিবাদের জবাবেই কনিমোঝির এই কটাক্ষ। তবে তাঁর মন্তব্য ঘিরে পাল্টা বিতর্ক দানা বাঁধছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে—সিনেমা আর বাস্তবকে এক করে যাঁরা মানুষকে প্রশ্ন করছেন, তাঁরা কি সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছেন?