তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলিতে চাঞ্চল্যকর ঘটনা— জাতিভিত্তিক সম্মান রক্ষার নামে কুপিয়ে খুন করা হলো ২৭ বছরের দলিত যুবক কাবিন সেলভা গণেশকে (Tamil Nadu)। হত্যার পিছনে অভিযুক্ত প্রেমিকার ভাই, যার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির পাশাপাশি তফসিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত সুরজিতকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Tamil Nadu)। তবে এই ঘটনার পর নেটমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তায় কাবিনের প্রেমিকা সুবাশিনী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন— “আমার পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়।”
সেই ভিডিওতে সুবাশিনী (Tamil Nadu)বলেন, “আমাদের সম্পর্কটা শুধুই আমি আর কাবিন জানতাম। আমার মা-বাবা কিছুই জানতেন না। দয়া করে না জেনে কিছু বলবেন না। সবাই মিথ্যে গুজব ছড়াচ্ছেন।”
কাবিন এবং সুবাশিনী প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন, তবে পরিবারকে জানানোর আগে আরও সময় নিতে চেয়েছিলেন তাঁরা (Tamil Nadu)। ৩০ মে সুরজিত ও কাবিনের মধ্যে ফোনে কথা হয়, তারপর সুরজিত বিষয়টি তাঁর বাবাকে জানান। বাবা জিজ্ঞেস করলে সুবাশিনী মিথ্যা বলে যে তিনি কাবিনকে ভালোবাসেন না। তিনি বলেন, “আমি শুধু সময় চেয়েছিলাম কাবিনের অনুরোধে।”
তাঁর দাবি, ২৮ জুলাই কাবিনকে (Tamil Nadu) বাড়িতে আসতে বলেছিলেন তিনি, তবে তার আগের দিন কাবিনের ঠাকুরদার মাথায় আঘাত পেয়ে ক্লিনিকে ভর্তি হন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন, ২৮ জুলাই, কাবিন তিরুনেলভেলির (Tamil Nadu) এক সিদ্ধ চিকিৎসাকেন্দ্রে যান ঠাকুরদার চিকিৎসার জন্য। সেখানে তাঁর পুরনো স্কুলমেট ও প্রেমিকা সুবাশিনীর সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। ঠিক তখনই ক্লিনিকের বাইরে তাঁর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে সুবাশিনীর ভাই সুরজিত। পুলিশ জানায়, সেই সময়ই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাবিনের ওপর হামলা চালায় সে (Tamil Nadu)।
আক্রমণের পর সুরজিত পালিয়ে গেলেও পরে পালায়ামকোট্টাই থানায় আত্মসমর্পণ করে।
কাবিন তুতিকোরিন জেলার আরুমুগামাঙ্গালাম গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দেবেন্দ্র কুলা ভেল্লালার, অর্থাৎ এক ডালিত উপ-জাতিভুক্ত সম্প্রদায়ের। অপরদিকে, সুবাশিনীর পরিবার মারাভার সম্প্রদায়ের, যা তামিলনাড়ুর একটি প্রভাবশালী জাতি। পুলিশ বলেছে, সুবাশিনীর পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি।
এদিকে, অভিযুক্ত সুরজিতের বাবা-মা — সরবনন ও কৃষ্ণকুমারী — দুজনেই তামিলনাড়ু পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত। তাঁদের নামও এফআইআরে রয়েছে এবং তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।
কাবিনের মা তামিলসেলভী অভিযোগ করেছেন, বহুদিন ধরেই তাঁর ছেলেকে হুমকি দিচ্ছিল ওই পরিবার। ফলে শুধু সুরজিত নয়, তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা দাবি করেছে কাবিনের পরিবার।
মৃত কাবিনের বাবা চন্দ্রশেখর বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ। মেয়েটি নিজেই ওকে হাসপাতাল যেতে বলেছিল। তারপর ওকে বাইরে নিয়ে গিয়ে মুখে লঙ্কাগুঁড়ো ছুঁড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে দেওয়া হয়। ওই পুলিশ অফিসার মা-বাবাকে অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।”
বর্তমানে কাবিনের পরিবার মৃতদেহ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং অভিযুক্ত পরিবারকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।