২০০৮ সালের মুম্বই জঙ্গি হামলার অন্যতম মূল চক্রী তাহাওয়ুর রানা (Tahawwur Rana) বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৭ বছর পর প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়ে ভারতে প্রত্যর্পণ হওয়ার পর গত ১০ এপ্রিল তাঁকে (Tahawwur Rana) তিহাড় জেলে আনা হয়। বন্দি নম্বর ১৭৮৪ হিসেবে রাখা হয়েছে তাঁকে (Tahawwur Rana), একটি বিশেষ হাই-রিস্ক সেলে।
প্রতিদিন সকাল ৭টা নাগাদ তাঁকে দেওয়া হয় চা, বিস্কুট, পাউরুটি ও ডালিয়া। দুপুরে দেওয়া হয় ভাত, ডাল ও সবজি। সন্ধ্যায় ফের চা ও স্ন্যাক্স এবং রাতের খাবারেও থাকে ভাত, ডাল ও সবজি। তবে তিহাড় জেল সূত্রে খবর, রানা খুব একটা খাওয়া-দাওয়া করছেন না, খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
জানা গিয়েছে, যে ওয়ার্ডে তাঁকে রাখা হয়েছে সেখানে আরও ছয়জন হাই-রিস্ক বন্দি রয়েছেন। প্রত্যেকেই নিজের নিজের সেলে সম্পূর্ণ একা, যাতে কারওর সঙ্গে কারও যোগাযোগ না হয়। অন্য ওয়ার্ডের কোনও বন্দিকেই এই ওয়ার্ডে ঢুকতে দেওয়া হয় না।
তাহাওয়ুর রানা এখন সুইসাইড ওয়াচে রয়েছেন, অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা তাঁর উপর নজর রাখা হচ্ছে। জেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, “তাঁর সেলে CCTV ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সবসময় নজরদারির মধ্যে রয়েছেন তিনি। খাবার দেওয়ার আগে জেল কর্মীরা তা পরীক্ষা করে, এমনকি স্বাদ নিয়ে তবেই পরিবেশন করা হয়।”
রানা এখন পর্যন্ত জেল কর্তৃপক্ষকে দুটি অনুরোধ করেছেন—
১. ইংরেজি বই
২. পশ্চিমী ধাঁচের (ওয়েস্টার্ন) টয়লেট।
জানা গিয়েছে, রানা কেবল ইংরেজিতেই কথা বলেন। তাঁকে ছয়টি কম্বল এবং একটি ফ্যান দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি কম্বল বিছানার জন্য বরাদ্দ।
গত সপ্তাহে দিল্লির পাটিয়ালা হাউসের বিশেষ NIA আদালত তাঁকে ৬ জুন পর্যন্ত ন্যায়বিচারিক হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। ইতিমধ্যেই NIA তাঁর কণ্ঠস্বর ও হাতের লেখা নমুনা সংগ্রহ করেছে।
প্রসঙ্গত, তাহাওয়ুর রানা একজন প্রাক্তন পাক সেনা চিকিৎসক। তিনি লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি ডেভিড হেডলির স্কুলজীবনের বন্ধু। অভিযোগ, ২৬/১১ মুম্বই হামলার প্রস্তুতির সময় হেডলিকে সহায়তা করেছিলেন রানা। তিনি হামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক সাপোর্ট ও রেকি (জায়গা চিহ্নিত করা)-তে সাহায্য করেছিলেন।