ঘৃণার ভাষণের লাগাম টানতে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে সরব হল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। তবে সেই পদক্ষেপ যেন হয় অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে—এমনই বার্তা দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’-র পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ রেখেই ঘৃণার ভাষণের মোকাবিলা করতে হবে (Supreme Court)।
সোমবার বিচারপতি (Supreme Court) বিভি নাগরত্ন ও কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চে শোনা যায়, “এই যে ঘৃণার ভাষণকে মানুষ স্বাভাবিক ভাবতে শুরু করেছে, এটাতেই সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ। কে কখন কী বলছেন, তা মানুষ এখন গুরুত্বই দিচ্ছে না। এই উদাসীনতা ভয়ানক।” আদালতের প্রশ্ন, “কেন এমন ভাষণ মানুষকে আর কষ্ট দেয় না? কেন এগুলো এখন আর কারও চোখে অনুচিত বলে ধরা পড়ছে না?”
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে ওয়াজাহাত খান নামক এক ব্যক্তির দায়ের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। এই মামলায় অভিযুক্ত হলেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলি। তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণার ভাষণ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন ওয়াজাহাত খান। সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বলেছে, এখন সময় এসেছে দেশের নাগরিকদের বোঝাতে হবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রকৃত মূল্য। কারণ এই স্বাধীনতাকে যদি লাগামহীন করে তোলা হয়, তাহলে একদিন না একদিন রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ করতেই হবে—আর সেটা কেউই চায় না।
শীর্ষ আদালত এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার, কেন্দ্র এবং মামলার আবেদনকারীর আইনজীবীকে স্পষ্টভাবে বলেছে, তারা যেন ঘৃণার ভাষণের নিয়ন্ত্রণে এমন কিছু বাস্তবসম্মত পদ্ধতির প্রস্তাব দেয়, যা একদিকে যেমন কটূক্তি ও বিদ্বেষ ছড়ানো থামাতে সাহায্য করবে, অন্যদিকে তেমনই সংবিধান-স্বীকৃত বাক্স্বাধীনতার মর্যাদাও অটুট রাখবে।
সব মিলিয়ে এই মামলার শুনানিতে শুধু একটি ঘটনার বিচার নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো ও সামাজিক সহাবস্থানের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।