ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথমবারের মতো পা রাখলেন এক ভারতীয় মহাকাশচারী—শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মার পর, ৪১ বছর পর ফের মহাকাশ অভিযানে ভারতের এক অসাধারণ কৃতিত্ব। অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়ের আগেই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন তিনি (Shubhanshu Shukla) ও তাঁর তিন সতীর্থ। পরবর্তী ১৪ দিন মহাকাশে কাটাবেন তাঁরা, যেখানে হবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ও গবেষণা।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার (Shubhanshu Shukla) নেতৃত্বে এই অভিযানের মূল লক্ষ্য, মহাকাশে কৃষিকাজ এবং মানব শরীরের ওপর মাইক্রোগ্রাভিটির প্রভাব বিশ্লেষণ করা। তাঁর সঙ্গে মহাকাশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৬ ধরনের ভারতীয় শস্যবীজ। সেগুলি মহাকাশের পরিবেশে ফলানো হবে, যাতে ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানের সময় প্রয়োজনীয় খাবার সেখানেই উৎপাদন করা যায়। এতে পৃথিবী থেকে খাবার বহনের ঝামেলা কমবে। গবেষণার অংশ হিসেবে দেখা হবে, মহাকাশে উৎপন্ন শস্যের পুষ্টিগুণ ও জিনগত বৈশিষ্ট্যে কোনও পরিবর্তন আসে কি না (Shubhanshu Shukla)।
এর পাশাপাশি, শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla) মাইক্রোঅ্যালজি নিয়েও গবেষণা করবেন। মহাকাশে দীর্ঘদিন থাকলে মানুষের পেশিতে ক্ষতি হয়। এই অ্যালজিগুলি সেই ক্ষতিপূরণে কতটা কার্যকর হতে পারে এবং রেডিয়েশন ও মাইক্রোগ্রাভিটির প্রভাবে এর পুষ্টিগুণ কতটা বদলায়, তা জানার চেষ্টা হবে।

মহাকাশে কাজ করার পাশাপাশি খাবার খাওয়ার বিষয়টিও বেশ চ্যালেঞ্জের। সেখানে সাধারণ খাবার খাওয়া সম্ভব নয়। তাই বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবার নিয়ে গিয়েছেন মহাকাশচারীরা। ইসরোর অধীন ডিফেন্স ইনস্টিটিউশন অব বায়ো-ডিফেন্স টেকনোলজি শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) জন্য তৈরি করেছে বিশেষ ভারতীয় খাবার—গাজরের হালুয়া, আমের রস এবং মুগ ডালের হালুয়া। এই খাবারে কোনও সংরক্ষণকারী রাসায়নিক নেই, অথচ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
মহাকাশে যাওয়ার আগে এক আবেগঘন মুহূর্তে শুভাংশু শুক্লা জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রিয় গান ‘স্বদেশ’ সিনেমার ‘ইউ হি চলা চল রাহি’। অবসরে তিনি সেই গান শুনেই কাটাবেন সময়, একান্তে দেশকে মনে করবেন।
এই অভিযানের প্রতিটি মুহূর্তই এক ঐতিহাসিক ধাপ ভারতের মহাকাশ অভিযানের যাত্রাপথে।