বিশ্বস্ততার প্রশ্নে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলোর মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (SBI Clerk) নাম একেবারে প্রথম সারিতে। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানেরই একটি শাখা ঘিরে এবার চাঞ্চল্যকর আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ। পঞ্জাবের ফরিদকোটে অবস্থিত স্টেট ব্যাঙ্কের একটি শাখায় এক ব্যাঙ্ককর্মীর বিরুদ্ধে উঠেছে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ (SBI Clerk) । অভিযোগ, সাধারণ গ্রাহকদের একের পর এক স্থায়ী আমানত (FD) ভেঙে সেই অর্থ নিজের পকেটে পুরেছেন ওই কর্মী। আর ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত।
বুধবার হঠাৎ করেই ফরিদকোটের ওই স্টেট ব্যাঙ্ক শাখায় (SBI Clerk) এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা যায়। শতাধিক ক্ষুব্ধ গ্রাহক ব্যাঙ্কে এসে ভিড় করেন। তাঁদের দাবি, অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা হঠাৎই উধাও। অনেকেই বলেন, অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি খালি হয়ে গিয়েছে। প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন, যাঁদের জীবনের সঞ্চিত সমস্ত অর্থই ছিল ওই অ্যাকাউন্টে। ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ঘিরে ধরা হয়, চত্বরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে (SBI Clerk) ।
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ক্লার্কের (SBI Clerk) বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, তার নাম অমিত ধিনগ্রা। তাকে আপাতত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সিসিটিভি ফুটেজ ও লেনদেন বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই কর্মী ১০০-রও বেশি গ্রাহকের স্থায়ী আমানত নিজের নামে ট্রান্সফার করে তা ভেঙেছেন। ব্যাঙ্কের অনুমান, প্রায় ৫ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে এই ঘটনায়।
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এক প্রবীণ মহিলা গ্রাহক পরমজিৎ কউর জানিয়েছেন, “আমাদের ২২ লক্ষ টাকার জয়েন্ট এফডি ছিল। কিন্তু এখন অ্যাকাউন্ট পুরো ফাঁকা।” অপর এক গ্রাহক সন্দীপ সিং জানিয়েছেন, “আমার সেভিংস অ্যাকাউন্টে ছিল ৪ লক্ষ টাকা। এখন রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার। বাকি টাকার কোনও হদিশ নেই।”
স্থানীয়দের মতে, অভিযুক্ত অমিত ধিনগ্রা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত নিঃশব্দে ও কৌশলে এই প্রতারণা চালিয়ে গিয়েছেন। তিনি প্রবীণ গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট বেছে নিতেন, যাঁদের ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যেস কম। ফলে দীর্ঘদিন এই জালিয়াতি নজর এড়িয়ে গেছে।
স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং অভিযুক্তের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
এই ঘটনায় ব্যাঙ্কে সাধারণ মানুষের আস্থা যে ফের বড়সড় ধাক্কা খেল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।