চন্দননগরের বসু পরিবারে পারিবারিক টানাপোড়েনের জেরে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। রাশিয়ান পুত্রবধূ (Russian Wife) ভিক্টোরিয়া ঝিঙ্গালিনা (বসু)-র বিরুদ্ধে উঠেছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। তাঁর স্বামী সৈকত বসুর দাবি, স্ত্রী চরবৃত্তির (Russian Wife) উদ্দেশ্যে ভারতে এসেছিলেন, এবং তাঁদের পাঁচ বছরের সন্তানকে নিয়ে রাশিয়ায় পলায়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট এবার দিল্লি পুলিশের কমিশনারকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে— অবিলম্বে মা (Russian Wife) ও শিশুকে খুঁজে বার করে শিশুটিকে বাবার হাতে তুলে দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এক নজিরবিহীন রায় দিয়ে নির্দেশ দেয়, ভিক্টোরিয়ার (Russian Wife) বিরুদ্ধে অবিলম্বে লুক আউট নোটিশ জারি করতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে বলা হয়েছে তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করতে এবং দেশ ছাড়ার সব রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা জারি করতে। একইসঙ্গে বিদেশমন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন রাশিয়ান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয় (Russian Wife) ।
আদালতে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ জুলাই শেষবার ভিক্টোরিয়াকে (Russian Wife) দিল্লির রাশিয়ান দূতাবাসে এক আধিকারিকের সঙ্গে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। এরপর থেকেই তাঁর কোনও খোঁজ নেই বলে অভিযোগ। সৈকতের আইনজীবী সৌম্য চক্রবর্তী জানান, সুপ্রিম কোর্ট এমনকি সেই দূতাবাস আধিকারিকের বাড়িতেও তল্লাশি চালানোর অনুমতি দিয়েছে। আদালতের বক্তব্য, ভারতীয় আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে রাশিয়ান দূতাবাস যেন পূর্ণ সহযোগিতা করে।
এছাড়া দেশের সমস্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন দফতরে অভিযুক্ত ভিক্টোরিয়ার নামে লুক আউট নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যাতে তিনি কোনওভাবেই বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, শিশুর সুরক্ষাই এই মামলার প্রধান অগ্রাধিকার।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে সৈকতের সঙ্গে বিয়ে হয় রাশিয়ান নাগরিক ভিক্টোরিয়ার। সৈকতের বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত নেভি অফিসার। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক জীবনে সমস্যা শুরু হয়। সৈকতের অভিযোগ, ভিক্টোরিয়ার বাবা একজন প্রাক্তন রাশিয়ান গুপ্তচর সংস্থার কর্মী। তিনি আরও জানান, ভিক্টোরিয়া নাকি বারবার তাঁকে ফোর্ট উইলিয়ামে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন, যার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল সন্দেহজনক।
সৈকতের আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, তাঁদের শিশু সন্তানটির ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন ভিক্টোরিয়া। এভাবেই ধীরে ধীরে সন্তানকে নিয়ে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে আপাতত বসু পরিবারের একমাত্র আশা— সন্তানকে ফিরে পাওয়া।