পুরী শহরে এবারের রথযাত্রা (Ratha Yatra) ঘিরে ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছিল সীমাহীন। রাস্তা উপচে পড়া জনস্রোত, ঢাক-ঢোল, কীর্তনের সুরে মুখরিত চারিদিক—সব মিলিয়ে এক মহাধুমধাম (Ratha Yatra)। তবে এই উৎসবের মাঝেই দেখা দিল চরম অব্যবস্থা। ফলত, সময়মতো মাসির বাড়ি পৌঁছাতে পারলেন না জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও যে সব নিয়ম মানা হয়েছে, কিন্তু রথের গন্তব্যে দেরিতে পৌঁছনো নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক (Ratha Yatra)।
রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, রথ ঠিক সময়েই যাত্রা শুরু (Ratha Yatra) করেছিল, কিন্তু অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে রথ বারবার আটকে পড়ে (Ratha Yatra)। পুলিশ ও সেবায়েতদের মধ্যে সমন্বয় হারানোয় যাত্রাপথে বাধা তৈরি হয়। প্রশাসনের মতে, এ বছর প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটেছে পুরীতে, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ভিড় বেড়ে যায়, এটাই প্রধান কারণ বলে দাবি করেন ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন (Ratha Yatra)।
তবে বিরোধীরা এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক সরাসরি না বললেও কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সরকারকে। তাঁর মন্তব্য, “আমরা কাউকে দোষ দিতে চাই না, কিন্তু রথযাত্রার মতো পবিত্র উৎসব নিয়ে এমন অব্যবস্থা মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত বছর বলরামের মূর্তি পড়ে গিয়ে ঘটেছিল দুর্ঘটনা, সেবার পরেও শিক্ষা নেয়নি সরকার। তাঁর আক্ষেপ, “জগন্নাথের লক্ষ লক্ষ ভক্ত ব্যথিত হয়েছেন এই অব্যবস্থায়।” তিনি আরও বলেন, “যাঁরা দায়ী, ঈশ্বর যেন তাঁদের ক্ষমা করেন। এবং সরকার যেন অন্তত একবার আত্মসমালোচনা করে।”
ওড়িশার কংগ্রেস নেতা ভক্ত চরণ দাস আরও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিজেপিকে। তাঁর প্রশ্ন, “রথযাত্রার দিনেও প্রশাসন কি ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা ঘিরেই ব্যস্ত ছিল?” উল্লেখযোগ্যভাবে, ওইদিন রথযাত্রায় পরিবারের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। কংগ্রেসের দাবি, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় শৃঙ্খলার বদলে গুরুত্ব পেয়েছে ভিভিআইপি ব্যবস্থাপনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, রথের ঘেরাটোপে যখন অসংখ্য ভক্ত ঢুকে পড়েন, তখন রথ এগোতেই পারেনি। নিরাপত্তা বলয় ভেঙে বহু মানুষ প্রবেশ করেন মূল যাত্রাপথে। ফলে বাধা পড়ে নিয়মিত চলায়। বহুবার রথ থামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে ভক্তি, ভিড় আর বিভ্রান্তির মাঝে এ বছরের রথযাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক, যার চাপ এবার সরাসরি এসে পড়েছে বিজেপি সরকারের ওপর।