অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে এবার ফের একবার বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম। বিরোধীদের দাবি, এই সংঘর্ষবিরতির পেছনে তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ ট্রাম্পের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। যদিও কেন্দ্র বারবার জানিয়েছে, পাকিস্তানের অনুরোধে দুই দেশের সেনাপ্রধানরা অর্থাৎ ডিজিএমও স্তরের বৈঠকে বসে এবং সেখানেই দু’দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। একাধিকবার ভারত স্পষ্ট করেছে, কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ হয়নি (Rahul Gandhi)।
তবে বিরোধীরা এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। মঙ্গলবার লোকসভায় এক বিশেষ আলোচনায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) কেন্দ্রকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, “যদি ট্রাম্প মিথ্যে বলেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী মোদী সংসদে দাঁড়িয়ে বলুন— ট্রাম্প মিথ্যেবাদী!” রাহুলের এই বক্তব্য ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় সংসদে।
রাহুলের (Rahul Gandhi) অভিযোগ, “অপারেশন সিঁদুরের সময় আমরা সরকারের পাশে ছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানে পাইলট পাঠালেও, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষায় আঘাত করতে বারণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাইলটদের কার্যত হাত বেঁধে পাঠিয়েছেন।” তাঁর দাবি, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আরও বেশি স্বাধীনতা দেওয়া উচিত ছিল।
রাহুল (Rahul Gandhi) আরও বলেন, “পহেলগাঁও হামলার নিন্দা করলেও, কোনও আন্তর্জাতিক শক্তি পাকিস্তানের নাম করেনি। কেন এই নীরবতা? কেন আমাদের কূটনীতি এত দুর্বল?”
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। ১৫ দিনের মাথায় ভারতীয় সেনা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এই অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিতি পায়। ভারত স্পষ্ট জানায়, সেনার নিশানা ছিল শুধুই জঙ্গি ঘাঁটি, কোনও বেসামরিক পরিকাঠামো নয়।
তবে এরপর পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি ভাঙে এবং সীমান্তে গুলি চালায়। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তানই বৈঠকে বসার অনুরোধ জানায়। সেই অনুরোধেই গত ১০ মে দুই দেশের ডিজিএমও বৈঠকে সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই ট্রাম্প মন্তব্য করেন, এই চুক্তিতে তাঁরও ভূমিকা ছিল।
এই দাবি নিয়েই উত্তাল দেশের রাজনীতি। একাধিক বিরোধী নেতা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ তোলেন। যদিও সরকার বারবার এই অভিযোগ খারিজ করেছে।
এদিন সংসদে রাহুলের তীব্র ভাষায় আক্রমণের পর নজর এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে— তিনি কি সত্যিই ট্রাম্পকে “মিথ্যেবাদী” বলবেন? নাকি ফের চুপ থাকবেন? রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বিতর্ক আরও জোরদার হতে চলেছে।