টেনিস থেকে বিদায় নিয়েও হাল ছাড়েনি রাধিকা যাদব (Radhika Yadav)। গুরুগ্রামের এই কিশোরী শুধু দুর্দান্ত খেলোয়াড়ই নয়, স্বপ্ন দেখত একদিন এলভিশ যাদবের মতো জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার (Radhika Yadav)। অথচ সেই রাধিকাকেই নিজের বন্দুক দিয়ে হত্যা করলেন তাঁর বাবা দীপক যাদব—এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন গুরুগ্রাম পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার যশবন্ত।
জানা গিয়েছে, রাধিকার (Radhika Yadav) বাবা দীপক তাঁর মেয়ের টেনিস প্রশিক্ষণে ২.৫ কোটির বেশি খরচ করেছিলেন। অথচ সম্প্রতি একটি চোটের কারণে খেলায় বিরতি পড়ে। এরপর রাধিকা বাবাকে বলে, “পাপা, আমি অনেক কনটেন্ট প্ল্যান করেছি। এবার টাকা রোজগার করব।” তিনি (Radhika Yadav) তখন খেলাধুলা থেকে সরিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেরিয়ার গড়ার কথা ভাবছিলেন। মা-কে পাশে নিয়ে রিল শুট করতেন প্রায়ই। পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কখনো এমন কিছু করবেন না যাতে তাঁদের নাম খারাপ হয় (Radhika Yadav)।
তবে গ্রামের লোকের টিপ্পনী—“মেয়ের টাকায় চলছো”—এই কথাই যেন ধ্বংস ডেকে আনল। পুলিশ জানিয়েছে, দীপক যাদব মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। গত ১৫ দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। গ্রামবাসীদের কটূক্তি তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত এই মানসিক চাপই তাঁকে নৃশংস এক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে—নিজের কন্যাকে (Radhika Yadav) গুলি করে হত্যা।
গুরুগ্রাম পুলিশের PRO সন্দীপ কুমার জানিয়েছেন, দীপক যাদবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। জানা গিয়েছে, রাধিকা একটি নিজস্ব টেনিস অ্যাকাডেমি চালু করেছিলেন, যেটা নিয়েও বাবার সঙ্গে তাঁর বিবাদ ছিল। দীপকের দাবি ছিল, তিনি যথেষ্ট সচ্ছল—মেয়েকে কাজ করতে হবে না। এর থেকেই চরম দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
তবে পুলিশ এই দাবিকে পুরোপুরি মানছে না। তদন্তে উঠে এসেছে, দীপকের বার্ষিক আয় ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি। শুধু ঘর ভাড়াই থেকে মাসে ৫-১০ লক্ষ টাকা রোজগার করতেন তিনি। ফলে অর্থকষ্ট বা টেনিস অ্যাকাডেমির বিষয়টিই একমাত্র কারণ—এমন ধারণা উড়িয়ে দিচ্ছে তদন্তকারী দল।
এখন প্রশ্ন—রাধিকার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি কে মুছে দিল? পুলিশ এই রহস্যও খতিয়ে দেখছে। এমনকি তদন্ত চলছে, পরিবারের অন্য কোনও সদস্য এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না।
রাধিকার জীবন থেমে গেল এক নিষ্ঠুর বাস্তবতায়। সে চেয়েছিল রিংয়ের বাইরেও নিজের পরিচয় তৈরি করতে, পরিবারকে গর্বিত করতে। অথচ যার জন্য এত স্বপ্ন, সেই বাবার হাতেই নিভে গেল সেই জীবন।