রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা নিয়ে এবার প্রত্যক্ষ প্রশ্ন তুললেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। বুধবার তিনি শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) উদ্দেশে জানতে চেয়েছেন — যেখানে সংবিধানে স্পষ্টভাবে কোনও সময়সীমা নির্ধারিত নেই, সেখানে আদালত (Supreme Court) কীভাবে সেই সময়সীমা চাপিয়ে দিতে পারে?
মূলত তামিলনাড়ু সরকার বনাম রাজ্যপাল মামলার প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহেশ্বরনের বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ দেয়, যদি কোনও রাজ্যপাল দীর্ঘ সময় ধরে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রাখেন, তবে বিচার বিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে। সেই নির্দেশেই বলা হয়েছিল, রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে তিন মাসের মধ্যে বিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
রাষ্ট্রপতির প্রশ্ন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে আদালত কীভাবে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব প্রতিস্থাপন করতে পারে? তিনি আরও জানতে চেয়েছেন, সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও রাজ্যপালের কাছে যখন বিল পেশ করা হয়, তখন তাঁর কি কি অপশন থাকে? এবং সেই প্রক্রিয়ায় আদৌ কি সময়সীমা আরোপযোগ্য?
রাষ্ট্রপতি মুর্মু সুপ্রিম কোর্টকে মোট ১৪টি প্রশ্নের উত্তর দিতে অনুরোধ করেছেন, যা সরাসরি সাংবিধানিক দায় ও কর্তব্যের সঙ্গে জড়িত।
এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নতুন প্রধান বিচারপতি বিআর গভাইকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির তোলা প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে কমপক্ষে ৫ জন বিচারপতির একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করতে হবে।
সংবিধানের ২০০ এবং ২০১ অনুচ্ছেদে রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির বিল স্বীকৃতি বা প্রত্যাখ্যানের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে তাতে কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমার কথা বলা হয়নি — এই যুক্তিতেই রাষ্ট্রপতি শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক ও আইনি মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কারণ, প্রথমবার কোনও রাষ্ট্রপতি এত স্পষ্টভাবে শীর্ষ আদালতের নির্দেশের ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন তুললেন। এখন দেখা যাক, সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ কীভাবে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়।