২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর দীর্ঘ চার বছর কেটে গেলেও ভারত ও চিনের সম্পর্কের বরফ পুরোপুরি গলেনি। তবে এবার সেই কূটনৈতিক দূরত্ব কমাতেই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi)। আসন্ন সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি যাচ্ছেন চিনের তিয়ানজিন শহরে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিন সফরে থাকবেন তিনি (PM Modi)।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর (PM Modi) শেষ চিন সফর ছিল ২০১৯ সালে। এরপর যদিও ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ব্রিকস সম্মেলনে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল, কিন্তু সেটি ছিল তৃতীয় কোনও দেশে অনুষ্ঠিত বৈঠকে। তাই চার বছরের বিরতির পর এই প্রথমবার মোদীর (PM Modi) চিন মাটি স্পর্শ করা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক বড় মোড়বদল বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সফরের পেছনে একাধিক ভূরাজনৈতিক কারণ রয়েছে। আমেরিকা সম্প্রতি ভারতের উপরে ট্যারিফ আরোপ করেছে এবং রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে লাগাতার চাপ তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিতে চিন-রাশিয়া-ভারত জোট গঠনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। যদি আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যে প্রভাব পড়ে, তবে চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে লাভজনক হতে পারে। তবে পাকিস্তানের প্রতি চিনের দীর্ঘদিনের সমর্থন, বিশেষ করে পুলওয়ামা হামলার পরের অবস্থান, ভারতকে পদক্ষেপে আরও সতর্ক করছে।
উল্লেখ্য, গত জুন মাসে এসসিও বৈঠকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং যৌথ বিবৃতিতে সই করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কারণ সেই বিবৃতিতে বালুচিস্তানের উল্লেখ থাকলেও পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার কথা বাদ দেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য চিন সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে নিজের অবস্থান জানায়।
আসন্ন এসসিও বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে গভীর আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নও আলোচনার অন্যতম এজেন্ডা। ফলে মোদীর এই সফর শুধু ভারত-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়, গোটা এশিয়ার কূটনৈতিক সমীকরণেও নতুন দিক খুলে দিতে পারে।