আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের (Plane Crash) ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর ডেটা উদ্ধার ও ডাউনলোড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, ওই ব্ল্যাক বক্সের (Plane Crash) মেমোরি মডিউলও সফলভাবে রিড করা গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গত ১২ জুন লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়ানের পর মুহূর্তের মধ্যেই আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি হোস্টেল (Plane Crash) কমপ্লেক্সে ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বিমানে থাকা ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রু এবং মাটিতে থাকা আরও ৩৪ জনের (Plane Crash)। সবমিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৭০ জনের। শুধু একজন যাত্রী এই দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।
বিমান দুর্ঘটনার পরদিনই, ১৩ জুন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ব্ল্যাক বক্সটি। এরপর সেটি পরীক্ষা করছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। আগেই নাগরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী কে রামমোহন নাইডু জানিয়েছিলেন, এটি বিদেশে পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা নেই।
ব্ল্যাক বক্স একটি ছোট যন্ত্র, যা উড়ানের সময় বিমানের সমস্ত প্রযুক্তিগত তথ্য ও ককপিটের কথোপকথন রেকর্ড করে রাখে। এটি বিমানের দুর্ঘটনার তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এদিকে এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন এবং এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ও এমডি ক্যাম্পবেল উইলসন। চন্দ্রশেখরন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের ‘টাটা পরিবারের অংশ’ বলে উল্লেখ করে, তাঁদের কেবল ক্ষতিপূরণের বাইরে গিয়েও সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
চন্দ্রশেখরন এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মী ইউনিয়নগুলোর সঙ্গেও আলোচনার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে মাটির ওপরে অপারেশনের ক্ষেত্রে যদি কোনও সমস্যা থাকে তা দ্রুত চিহ্নিত করে সমাধান করা যায়। বিশেষভাবে বিমান রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের সঙ্গে আলোচনারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডিজিসিএ’র তরফ থেকে ইতিমধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার সমস্ত বিমানের স্বাস্থ্য নিরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে চন্দ্রশেখরনকে পৃথকভাবে ব্রিফ করা হবে। আজ, বৃহস্পতিবারই বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবে এয়ার ইন্ডিয়া ম্যানেজমেন্ট।
এদিকে দুর্ঘটনার একদিন পরই ডিজিসিএ নির্দেশ দেয় যে এয়ার ইন্ডিয়ার ২৬টি বোয়িং ৭৮৭-৮ ও সাতটি ৭৮৭-৯ বিমানকে অতিরিক্ত নজরদারিতে রাখা হবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, উইলসন জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় ব্যবহৃত বিমানটি “ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা” ছিল। এটি ২০২৩ সালের জুনে বড়সড় পরীক্ষা পাশ করেছিল এবং পরবর্তী চেকআপ নির্ধারিত ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।
তিনি আরও বলেন, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ফলে এয়ার ইন্ডিয়ার ওয়াইড-বডি বিমানের ১৫ শতাংশ পরিষেবা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে, যার ফলে কিছু যাত্রীর যাত্রা পরিকল্পনায় প্রভাব পড়তে পারে।
উইলসনের কথায়, “২৪১ জন যাত্রী ও কর্মী এবং মাটির ওপরে থাকা ৩৪ জনকে হারিয়ে আমরা সকলেই গভীর শোকস্তব্ধ। এই ভয়াবহ ঘটনার যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমরা নিহতদের পরিবারকে সর্বোচ্চ সাহায্য দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”