অহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত মেঘানীনগর ও আসারওয়া এলাকায় ১২ জুন বৃহস্পতিবার যে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা (Plane Crash) ঘটেছে, তা চিরতরের মতো বদলে দিয়েছে স্থানীয়দের জীবন। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ২৭০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার (AI 171) বিমানটি ২৪২ জন যাত্রীসহ উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মেঘানিনগরের একটি মেডিকেল কলেজের হোস্টেল ভবনে আছড়ে পড়ে (Plane Crash)। এর ফলে গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে আসে।
যদিও তদন্ত এখনও চলছে, স্থানীয়রা বলছেন, এটি আবাসিক এলাকায় না পড়ে হাসপাতালের পেছনের খালি জায়গায় (Plane Crash) পড়ায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বেঁচে গেছে। মাত্র ৫০০ মিটার পার্থক্য অজস্র জীবন রক্ষা করেছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
মেঘানিনগরের বাসিন্দা আকাশ পাতনি জানিয়েছেন, “বিমানটা অনেক নিচু দিয়ে যাচ্ছিল। আমার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। মনে হচ্ছিল শেষ দিন আজই। আমার স্ত্রী নিচে পড়ে গিয়েছিল ঝাঁকুনিতে। পাইলটরা সম্ভবত খালি জায়গায় নামাতে চেয়েছিলেন (Plane Crash)।”
আশেপাশের বাড়ি, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোর ক্ষতি হয়েছে। একটি গাছের মাথা এবং একটি খুঁটির উপরের অংশ ভেঙে পড়েছে। তদন্তকারীরা এলাকাটি ঘুরে দেখেছেন।
পান দোকানদার মহেন্দ্র সিং জাদেজা বলেন, “বিমানটা খুব অদ্ভুত আওয়াজ করছিল। মনে হচ্ছিল আমার দোকানের পাশের নিমগাছে ধাক্কা মারবে। গাছের ওপর দিয়ে সামান্য ফাঁকে পেরিয়েই পেছনের দিকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। আমি দৌড়ে বেরিয়ে যাই।”

১৭ বছর বয়সী আর্যন আসারি দুর্ঘটনার মুহূর্তের একটি ভিডিও ধারণ করে ফেলেন, যা এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হয়ে উঠেছে। তিনি জানান, “বিমানটা নিচু দিয়ে যাওয়ায় ভিডিও করছিলাম। হঠাৎ করেই ভয়াবহ শব্দে ধাক্কা মারে। এখন আর কখনো বিমানে উঠতে ইচ্ছা করে না।”
বাচ্চাদের কাছে একসময় আকাশে ওড়া বিমান ছিল মজা ও আনন্দের বিষয়। কিন্তু আজ সেই শব্দই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইয়াশ পরমার বলেন, “ছাদে উঠে প্লেন দেখতাম, হাত নাড়তাম। এখন ইঞ্জিনের শব্দ শুনলেই ভয়ে গায়ে কাঁটা দেয়। বাবা-মা ছাদে যেতে দেয় না।”
আসারওয়ার হিতেশ শাহ বলেন, “আগুনের বল আকাশ ঢেকে ফেলেছিল। এখন প্রতিটি প্লেনের শব্দে মনে হয় আরেকটা দুর্ঘটনা ঘটবে। শুধু প্রার্থনা করি, যেন আর কেউ না মরে।”