গত শুক্রবার ছিল এক নিখুঁত পারিবারিক মুহূর্ত । ১৫ বছর পর, চার ভাইবোন পরিবার-পরিজন নিয়ে একসঙ্গে আহমেদাবাদে এসেছিলেন ঈদ-উল-আজহারের আনন্দ ভাগ করে নিতে। মা’র সঙ্গে ঈদের এই মিলন যেন এক স্বপ্নের মতো ছিল (Plane crash)।
কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই স্বপ্নভঙ্গ (Plane crash)। ৩৭ বছর বয়সী জাভেদ, তাঁর স্ত্রী মরিয়ম, পাঁচ বছরের ছেলে এবং চার বছরের মেয়ে — এই চারজনই ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI 171 তে। গত বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে উড্ডয়নের ৩২ সেকেন্ড পরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমানটি, এবং ধাক্কা মারে একটি ভবনে (Plane crash)। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন মারা গিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে জাভেদের পরিবারও ছিল (Plane crash)।
জাভেদের মা, যিনি হৃদরোগে আক্রান্ত এবং শিগগিরই অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তাঁকে এখনও কিছু জানানো হয়নি v। পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আছেন – কিভাবে তাঁকে এই খবর দেওয়া সম্ভব? একসঙ্গে চারজন প্রিয়জন হারানোর খবর তাঁর হৃদয় নিতে পারবে না।
আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে দাঁড়িয়ে জাভেদের ভাই ইমতিয়াজ বলেন, “ও আমার ভাই ছিল। আনন্দ করতে এসেছিল, ঈদ করতে এসেছিল আমাদের সঙ্গে। এখন চারজন চলে গেল একসঙ্গে। কে দায়ী এর জন্য? এক সেকেন্ডেই সব শেষ। কীভাবে এমনটা হলো?”

জাভেদ ১১ বছর আগে পড়াশোনা করতে ব্রিটেন গিয়েছিলেন। সেখানে মরিয়মের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও বিয়ে হয়। পরে তাঁরা ব্রিটিশ নাগরিক হন। ইমতিয়াজ বলেন, “মা’র জন্য আমরা সবাই এবার একসঙ্গে এসেছিলাম। মায়ের হার্টে স্টেন্ট বসানো হয়েছে, আরও একটি বসানোর কথা। এত বছর পর একসঙ্গে সবাই মিলে মা’র সঙ্গে ঈদ করলাম। সবকিছু নিখুঁত ছিল… সত্যিই নিখুঁত।”
মাকে এখনো জানানো হয়নি কিছু। ইমতিয়াজ জানান, “ওনাকে বলেছি শুধু একটা তদন্ত চলছে। হয়তো ওনাকে বলা হয়েছে ওরা হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাঁর হার্টের অবস্থা ভালো নয়, কিছু বলাও যাচ্ছে না।”
জাভেদের মৃতদেহ শনাক্তের জন্য ইমতিয়াজ বৃহস্পতিবার রাতেই নিজের রক্তের নমুনা দেন। এখনও তিনি হাসপাতালে হাসপাতাল খুঁজে বেড়াচ্ছেন, যদি কোথাও কোনো ভুল হয়ে থাকে নামের বা চিহ্নের। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে দেহগুলো পুড়ে এমনভাবে গেছে যে চেনা যাচ্ছে না।
“ডিএনএ রিপোর্ট আসলেই শুধু নিশ্চিত হতে পারব। বলা হয়েছে রবিবারের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া হবে, এত মানুষের নমুনা নিয়ে এত তাড়াতাড়ি রিপোর্ট আসবে কীভাবে বুঝতে পারছি না,” বলেন ইমতিয়াজ।
বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র একজনই বেঁচে আছেন। বাকি সবাই প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্ঘটনাস্থল আহমেদাবাদ মেঘাণীনগরে অবস্থিত বিএজে মেডিকেল কলেজেও অন্তত ১০ জন মারা গেছেন।