১২ জুন ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যু হলেও, কিছু মানুষ ভাগ্যের অদ্ভুত খেলায় বেঁচে যান (Plane crash)। প্রকৃতি যেন আগেভাগেই সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল—কখনো মায়ের কান্না, কখনো বাবার অজানা অস্থিরতা, তো কখনো নথিপত্রের জটিলতা। এইসব ঘটনাই আজ মানুষের মুখে মুখে ফিরছে, যেন এক অলৌকিক শক্তি সময়ের আগে রক্ষা করেছে কিছু জীবন।
বড়োদরার বাসিন্দা যমন ব্যাস, যিনি যুক্তরাজ্যে কর্মরত, সেইদিনই লন্ডনে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। দুই বছর পর বাড়ি ফিরে আবার এক বছরের জন্য বিদেশে পাড়ি দিতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। সমস্ত কাগজপত্র ও ব্যাগপত্র গুছানো ছিল। তবে যাওয়ার আগে মায়ের কাছে আশীর্বাদ নিতে গেলে মা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। মায়ের কথায়, “তুই কি কয়েকটা দিন আর থাকতে পারিস না, বাবা?”
বাবাও মায়ের সঙ্গে সহমত হন। ছেলের জন্য অজানা আশঙ্কায় তাড়িত হয়ে তাঁরা অনুরোধ করেন কিছুদিন থেকে যাওয়ার জন্য। যমন, মা-বাবার কথার মান রাখতে, সঙ্গে সঙ্গে টিকিট বাতিল করেন। কয়েক ঘণ্টা পরেই ফোনে খবর আসে—বিমানটি ভেঙে পড়েছে। তখনই বুঝতে পারেন, কীভাবে মা-বাবার আবেগই (Plane crash) তাঁর প্রাণ বাঁচিয়ে দিয়েছে।
ঠিক এমনই আরেক ঘটনা ঘটে নিকোল (Plane crash) এলাকার সাবজি টিমবাদিয়ার সঙ্গে। তাঁর লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল, ছেলের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু সেদিন সকালে তিনি হঠাৎ জানান যে, তাঁর মনটা অস্থির লাগছে, উড়ে যেতে ইচ্ছা করছে না। ছেলে যখন কারণ জানতে চায়, তখন তিনি বলেন, “ঠিক বুঝিয়ে বলতে পারছি না, শুধু মনে হচ্ছে আজ যাওয়া উচিত নয়।”

সেইদিন বিকেলে বন্ধু টিভি চালিয়ে দেখতে বলার পর তিনি খবর পান বিমান দুর্ঘটনার (Plane crash) কথা। তখনই মনে পড়ে যায়, সেই অজানা অস্থিরতা যেন তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছিল। তাঁর মতে, “ভগবান স্বামিনারায়ণই আমায় রক্ষা করেছেন।”
একই বিমানে চড়ার কথা ছিল জৈমিন প্যাটেল (২৯) এবং প্রিয়া প্যাটেল (২৫)-এর। তাঁরা আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন লন্ডন সফরের উদ্দেশ্যে। সেখানে তাঁদের বন্ধুর সঙ্গে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নথিপত্রের কিছু জটিলতার কারণে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ তাঁদের বোর্ডিং পাস দেয়নি (Plane crash)। অনেক অনুরোধ করেও লাভ হয়নি।
দুজনেই বিমানে উঠতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যান। কিন্তু এক ঘণ্টা পরেই এক বন্ধুর ফোন আসে, “একবার টিভি অন কর।” সেখানে দেখেন, তাঁদের যে ফ্লাইটে ওঠার কথা ছিল, সেটাই ভেঙে পড়েছে। তখন জৈমিন বলেন, “আমি কোনোদিন এতটা কৃতজ্ঞ হইনি। এয়ার ইন্ডিয়ার স্টাফদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের সিদ্ধান্তই আজ আমাদের জীবিত রেখেছে।”
এই সমস্ত কাহিনিগুলি যেন সাক্ষ্য দেয়, কপালে যা লেখা আছে, তা কেউ বদলাতে পারে না। তবে সময়ের একটু আগে কেউ কেউ পেয়ে যান এক অজানা সংকেত—যা তাঁদের জীবন বাঁচিয়ে দেয়।