গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রকে খুনের ছক রচনা হয়েছিল জেলের মধ্যেই। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি! সরাসরি পুরুলিয়ার (Purulia) কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে যোগাযোগ করা হয় পটনার কুখ্যাত অপরাধী তৌসিফ রাজার সঙ্গে। এই তৌসিফ পরিচিত ‘কিং অব পটনা’ নামে। মাত্র ১০ লক্ষ টাকার সুপারিতে চন্দনের মৃত্যুর ছাপ একে দেওয়া হয়েছিল তার হাতে (Purulia)।
তারপর যা ঘটে, তা যেন সিনেমাকেও হার মানায় (Purulia)। মুখে মুখোশ নেই, চোখে ভয় নেই— বুক চিতিয়ে একদল আততায়ী ঢুকে পড়ে হাসপাতালের ঘরে, যেখানে মেডিক্যাল প্যারোলে চিকিৎসাধীন ছিলেন চন্দন মিশ্র। সেখানেই গুলি করে তার খুন হয় (Purulia)।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি, এর মধ্যেই শনিবার সকালে কলকাতার নিউটাউনের এক বিলাসবহুল আবাসন থেকে ধরা পড়ে পাঁচ মূল অভিযুক্ত। আততায়ীদের কলকাতায় লুকিয়ে থাকার খবর এল কোথা থেকে? পুলিশের দাবি, সেই সূত্র মিলেছে পুরুলিয়ার জেলে বন্দি আরও এক কুখ্যাত অপরাধী ওঙ্কার সিং ওরফে শেরুর কাছ থেকে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, চন্দনের প্রাক্তন সঙ্গী ছিল এই শেরু। একসময় তারা একসঙ্গে অপরাধ জগতে দাপিয়ে বেড়াত। ডাকাতি, ছিনতাই, খুন— সবই ছিল তাদের ‘ব্যবসা’। কিন্তু পটনায় একটি গহনার দোকানে ডাকাতির পর চুরি করা জিনিসের বাটোয়ারা নিয়ে চন্দন ও শেরুর সম্পর্কের তিক্ততা চরমে ওঠে। তার পরেই ভেঙে যায় জুটি।
পরে দু’জনেই পুলিশের জালে পড়ে। চন্দন থাকত ভাগলপুরে, আর শেরু বন্দি হয় রাজ্য পুলিশের হেফাজতে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পুরুলিয়ার জেল (Purulia) থেকে পুরনো শত্রুতা মেটাতে শেরু যোগাযোগ করে তৌসিফ রাজার সঙ্গে, যার সঙ্গে তার আলাপ হয়েছিল আগেই, বিহারের বেউর জেলে থাকার সময়। শেরুর ইঙ্গিতেই তৌসিফ নেয় চন্দনের খুনের দায়িত্ব।
এরপর প্ল্যান মতো আততায়ীরা পটনার ওই হাসপাতালের কাছে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। সেখান থেকেই চালানো হয় হত্যার অভিযান। আর সেই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের পর কলকাতায় এসে গা-ঢাকা দিয়েছিল আততায়ীরা। পুলিশের হানায় ধরা পড়ে তারা।
তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে— কীভাবে পুরুলিয়ার (Purulia) জেল থেকেই এত বড় চক্রান্ত? কারা দিল এই পরিকল্পনায় সাহায্য? জেল কর্তৃপক্ষ কি জানতেন কিছু? তৌসিফ, শেরু ও ধৃত পাঁচ আততায়ীকে জেরা করে উঠে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য।
এই ঘটনায় শুধু রাজ্য নয়, গোটা দেশে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। রাজনৈতিক মহলও সরব হয়েছে। গ্যাংস্টারদের পুরনো শত্রুতায় এত বড় হামলা, তাও জেল ও হাসপাতাল— দুই নিরাপদ জায়গায়! নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভরসা কোথায়, উঠছে এমন প্রশ্নও।