ধর্মীয় উন্মাদনায় মৃত্যু যেন তখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা (Pahalgam Attack)। পহেলগাঁওয়ের বৈসরন ভ্যালিতে জঙ্গিরা যখন পর্যটকদের ধর্মপরিচয় যাচাই করে একের পর এক প্রাণ কাড়ছিল, সেই মুহূর্তেই কলমা পাঠ করে নিজের জীবন বাঁচালেন অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য (Pahalgam Attack)। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি (Pahalgam Attack)।
ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান দেবাশিসবাবু সেই মুহূর্তের কথা জানাতে গিয়ে বলেন, “গাছের তলায় পরিবার নিয়ে বিশ্রাম করছিলাম। হঠাৎ শুনি আশপাশের লোকজন জোরে জোরে কলমা পড়ছে। কেন যেন ভেতর থেকে এক তাগিদে আমিও তাদের সঙ্গে গলা মেলাই। ঠিক তখনই এক জঙ্গি আমার দিকে এগিয়ে এসে জানতে চায়—‘কী করছ?’ আমি কিছু না বলে আরও জোরে কলমা পড়তে থাকি। আমাকে কিছু না বলেই ও সরে গিয়ে পাশের একজনকে গুলি করে।”
এই অভিজ্ঞতা যেন বিভীষিকার থেকেও বেশি কিছু। বৈসরন ভ্যালির সেই রক্তাক্ত মঙ্গলবার দুপুরে, যেখানে ধর্ম ছিল বাঁচার বা মরার মানদণ্ড। কেউ কলমা পড়তে না পারায় খুন হয়েছেন, কেউ স্ত্রীর সিঁদুর দেখে টার্গেট হয়েছেন, আবার কারও পোশাক খুলিয়ে পরিচয় যাচাই করেছে আততায়ীরা—এমনই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। আর দেবাশিসবাবুর অভিজ্ঞতা নতুন করে প্রশ্ন তুলছে: এই ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতির শেষ কোথায়?
তবে এই ঘটনায় একটাই সান্ত্বনা—একটি পরিবার প্রাণে বেঁচে ফিরেছে। কিন্তু যারা ফিরল না, তাদের জন্য ন্যায়বিচার যেন শুধু দাবি নয়, চূড়ান্ত প্রয়োজন।