দেশের পশ্চিম সীমান্তে ৩১ মে আবার শুরু হতে চলেছে ‘অপারেশন শিল্ড’ (Operation Shield)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এই বিশাল আকারের সিভিল ডিফেন্স মহড়া শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে একযোগে চালানো হবে সমস্ত সীমান্তবর্তী জেলায়, যার মধ্যে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরও। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নাগরিক ও সামরিক প্রস্তুতি কেমন, সেটা যাচাই করতেই এই অনুশীলনের (Operation Shield) আয়োজন।
এই মহড়ার জন্য নির্দেশ (Operation Shield) জারি করা হয়েছে ১৯৬৮ সালের সিভিল ডিফেন্স রুলসের ১৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী। গোটা কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানে থাকবেন সিভিল ডিফেন্সের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল।
এর আগে, ৭ মে প্রথম দফার অনুশীলন(Operation Shield) হয়, যার ফলে বেশ কিছু দুর্বলতা ও প্রস্তুতির ফাঁকফোকর ধরা পড়ে। সেগুলি কাটিয়ে আরও নিখুঁত প্রস্তুতির জন্য এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের মহড়া।
এবারের ‘অপারেশন শিল্ড’-এ (Operation Shield) থাকবে একাধিক যুদ্ধ অনুরূপ পরিস্থিতির অনুশীলন— নাগরিক স্বেচ্ছাসেবকদের সাধারণ ও নীরব মোবিলাইজেশন, শত্রু বিমান, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সিমুলেশন, এয়ার ফোর্স ও সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের মধ্যে হটলাইন যোগাযোগ পরীক্ষার কাজ।
এই অনুশীলনে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রিত এয়ার রেইড সাইরেন বাজানো হবে এবং নাগরিক এলাকায় ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হবে। আকাশপথে হামলার সিমুলেশনের পাশাপাশি, সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার অনুশীলন হবে। ২০টি মক লাশ (ভুয়ো হতাহত) সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে চালানো হবে ইভাকুয়েশন ড্রিল।
একইসঙ্গে থাকবে Mass Casualty Management— ৩০ ইউনিট রক্ত প্রস্তুত রাখা হবে, মোতায়েন থাকবে প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল টিম।
এর অংশ হিসেবে রিয়ার এরিয়া সিকিউরিটি প্ল্যান অনুযায়ী ভারতীয় সেনা বর্ডার উইং হোম গার্ডস মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে। সেনাবাহিনী ও হোমগার্ড একসঙ্গে মহড়ায় অংশ নেবে। সেনা বাহিনীর দ্রুত গতিতে মোবিলাইজেশন ও ফিরে আসার অনুশীলনও হবে, যাতে দেখা যায় জরুরি অবস্থায় কত দ্রুত ফোর্স মোতায়েন সম্ভব।
জেলার প্রশাসনকে বলা হয়েছে, বিকেল পাঁচটা থেকে মহড়া শুরু করতে হবে। এই অনুশীলনে অংশ নিচ্ছে NCC, NSS, NYKS, ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস-এর মতো যুব সংগঠনগুলোও।
অনুশীলনের পরে প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে, যেখানে তাদের পারফরম্যান্স, ঘাটতি ও ভবিষ্যৎ করণীয় উল্লেখ করতে হবে।
এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA), জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF), যুব মন্ত্রক এবং জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, হরিয়ানা ও চণ্ডীগড়ের মুখ্যসচিব ও প্রশাসকদের কাছে।
মূলত ২৯ মে তারিখে এই অনুশীলনের পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু প্রশাসনিক কারণে তা পিছিয়ে ৩১ মে করা হয়েছে। লক্ষ্য একটাই—যুদ্ধ বা শত্রু হামলার পরিস্থিতিতে দেশের সিভিল-মিলিটারি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে তাত্ক্ষণিক ও সুনির্দিষ্ট করে তোলা।