বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। রাজনৈতিক জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে তিনি ফের একবার “পাল্টুরাম” বলে সমালোচিত হচ্ছেন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নীতীশের (Nitish Kumar) সাম্প্রতিক এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যায়— মাদ্রাসা বোর্ডের অনুষ্ঠানে তাঁকে দেওয়া মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী টুপি মাথায় নিতে অস্বীকার করেন তিনি। উপস্থিত মঞ্চে পাশে থাকা সংখ্যালঘু কল্যাণমন্ত্রী মহম্মদ জামা খানের মাথায় সেই টুপি নিজে পরিয়ে দেন নীতীশ।
এরপর থেকেই বিরোধীরা তোপ দেগে বলেন, নীতীশ (Nitish Kumar) সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে দ্বিচারিতা করছেন। কারণ, রাজ্যের প্রায় ১৮ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট আগামী নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে। ফলে নীতীশের এই আচরণকে অনেকেই ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করছেন।
এখানেই শেষ নয়। নীতীশের (Nitish Kumar) পুরনো বক্তব্য ঘিরেও শুরু হয়েছে প্রবল আলোচনা। ২০১৩ সালে নীতীশ কুমার প্রকাশ্যে বলেছিলেন— “দেশ চালাতে হলে টুপি আর তিলক দুটোই প্রয়োজন।” সেই সময় তিনি নাম না করে সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেছিলেন। কারণ, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মোদি এক ধর্মগুরুর দেওয়া টুপি মাথায় নিতে অস্বীকার করেছিলেন। সেই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙেও দিয়েছিলেন নীতীশ। অথচ আজ থেকে বারো বছর পর তিনি আবার মোদির সঙ্গী হয়ে বিজেপির হাত ধরেই নির্বাচন লড়ছেন।
শতবর্ষ পালনে আয়োজিত মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুষ্ঠানে নীতীশ দাবি করেন, তাঁর সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। তিনি বলেন, “২০০৫ সালের আগে মুসলিম সমাজের জন্য কিছুই হয়নি। এখন মাদ্রাসা শিক্ষকদের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের মতো বেতন দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম মহিলাদের অধিকারেও আমরা কাজ করেছি।” তবে অনুষ্ঠানেই একাধিক শিক্ষক বেতন বকেয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের দাবি গ্রহণ করলেও অসন্তোষ থেকে যায়। এক শিক্ষক বলেন— “তিনি শুধু পুরনো দিনের সাফল্য নিয়ে কথা বললেন। আমাদের বর্তমান সমস্যার কথা কিছুই বললেন না।”
নীতীশের সমর্থনে জেডিইউ নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি ধর্মনিরপেক্ষ এবং সবসময় সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করে আসছেন। দলের এমএলসি খালিদ আনোয়ার বলেন— “মুখ্যমন্ত্রী টুপি মন্ত্রীর মাথায় দিয়ে মুসলিম সমাজের মর্যাদা আরও বাড়িয়েছেন।” তাঁর অভিযোগ, আসলে বিরোধী দল আরজেডিই-ই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে চাইছে।