বিহার নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হচ্ছে এনডিএ (Nitish Kumar) শিবির। শনিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীরা। লক্ষ্য ছিল রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো, এবং জোটের ঐক্য তুলে ধরা। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই ঘটে এমন এক ঘটনা, যা ফের জল্পনার আগুনে ঘি ঢালে। বৈঠকের মাঝপথেই হঠাৎ করে বেরিয়ে যান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। এই অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে চতুর্দিকে শুরু হয়েছে আলোচনা— তবে কি ফের ভাঙছে এনডিএ জোট?
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা-সহ একাধিক শীর্ষ নেতা। এনডিএ-র এই ‘একতা প্রদর্শনী’ মূলত লোকসভা নির্বাচনের পর ফের শক্ত করে বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই আয়োজিত হয়েছিল।
তবে সেই ছবিতে বড়সড় খাঁচ লেগে গেল নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) এই আচরণে। যদিও সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, নীতীশ শারীরিক অসুস্থতার (Nitish Kumar) কারণে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং পরে ফের যোগ দিতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিজেপির নেতা বিনোদ তাওড়ে তাঁকে দিল্লির অশোকা হোটেল থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দেন বলেও জানা গেছে।
তবে রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ বলছে অন্য কথা। কারণ, এই নিয়ে পরপর দু’দিন কেন্দ্রীয় বৈঠক থেকে দূরে থাকলেন নীতীশ কুমার। শুক্রবার তিনি অনুপস্থিত ছিলেন নীতি আয়োগের গভার্নিং কাউন্সিল বৈঠকেও। এতে বিরোধী শিবিরে নতুন করে উৎসাহ দেখা দিয়েছে, এবং জোর জল্পনা শুরু হয়েছে— লোকসভা ভোটের আগেই যিনি কংগ্রেস-আরজেডি জোট ভেঙে ফের এনডিএ-তে ফিরেছিলেন, তিনি কি আবার জোট বদলের পথে হাঁটছেন?
উল্লেখযোগ্যভাবে, বিহার নির্বাচনের মূল ইস্যু হয়ে উঠেছে জাতি ভিত্তিক জনসুমারি। এই ইস্যুতে বিরোধী জোট আগেই সরব হয়েছে। যদিও শনিবারের বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব গ্রহণের কথাও ছিল।
তবে নীতীশের এই আচরণ, বিশেষত ভোটের মুখে, রাজনৈতিক বার্তাই দিচ্ছে। একদিকে বিজেপির কাছে এটি স্পষ্ট বার্তা হতে পারে— তাঁর শর্ত না মানলে, জোটে থাকাটাই অনিশ্চিত। অন্যদিকে বিরোধী পক্ষও নীতীশকে আবার টানতে পারে নিজেদের দিকে।
সব মিলিয়ে, বিহার ভোটের আগে ‘জোট-রাজনীতির’ জমি ফের চরম টানাপোড়েনে। জবাব সময়ই দেবে, তবে আজকের নাটকীয়তা এনডিএর অন্দরে নতুন করে দ্বিধা ও অনিশ্চয়তার বার্তা দিয়ে গেল।