প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ৫ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিতব্য ১৭তম ব্রিকস (BRICS) সম্মেলনে অংশ নিতে চলেছেন। এবারের সম্মেলনে গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।
ব্রিকস সম্মেলনে (BRICS) প্রধানমন্ত্রী মোদী বিশ্বজুড়ে চলমান গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু যেমন বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার সংস্কার, শান্তি ও নিরাপত্তা, বহুপাক্ষিকতা জোরদারকরণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিক ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সহযোগিতার মতো বিষয়গুলিতে বক্তব্য রাখবেন (BRICS) ।
ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে তিনি একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন বলে জানা গিয়েছে। ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় তিনি দেশটির রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আলোচনার মূল বিষয়গুলির মধ্যে থাকবে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, শক্তি, মহাকাশ প্রযুক্তি, কৃষি এবং স্বাস্থ্য।
ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষে রিও সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই জুলাই মাসের বিদেশ সফর শুরু হচ্ছে ঘানা থেকে। ২ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত তিনি ঘানা সফরে থাকবেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এটি হবে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক ঘানা সফর, তিন দশকেরও বেশি সময় পর।
ঘানা সফরের পর মোদী ৩ থেকে ৪ জুলাই ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে যাবেন, সেখানকার প্রধানমন্ত্রী কামলা পার্সাড বিসেসরের আমন্ত্রণে। এরপর ৪ জুলাই থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত তিনি আর্জেন্টিনা সফরে থাকবেন এবং রাষ্ট্রপতি জাভিয়ার মিলেই-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
৫ থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি ব্রাজিলে থাকবেন এবং ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেবেন। এরপর এই দীর্ঘ বিদেশ সফরের অন্তিম পর্যায়ে ৯ জুলাই তিনি নামিবিয়া সফরে যাবেন। নামিবিয়ার রাষ্ট্রপতি নেতুম্বো নান্দি-নদাইত্বাহের আমন্ত্রণে এই সফর হবে।
ব্রিকস গোষ্ঠীর ইতিহাসের দিক থেকে বললে, এটি মূলত ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এতে যুক্ত হয়। ২০২4 সালে এই গোষ্ঠীতে আরও ছয়টি দেশ যুক্ত হয়েছে— মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এছাড়া ইন্দোনেশিয়াও শীঘ্রই ব্রিকস-এর সদস্যপদ পাবে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর এবারের বিদেশ সফর কেবল একাধিক দেশের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করবে না, একইসঙ্গে ব্রিকস গোষ্ঠীতে ভারতের অবস্থানকেও আরও মজবুত করে তুলবে বলে আন্তর্জাতিক মহলে ধারণা তৈরি হয়েছে।