২০০৮ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণ (Malegaon Blast) মামলায় দীর্ঘ ১৭ বছর পর অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্ত প্রসাদ পুরোহিত। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের এক বিশেষ এনআইএ আদালত এই মামলার সাতজন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস ঘোষণা করে (Malegaon Blast)। এর মধ্যে ছিলেন পুরোহিত এবং বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। আদালতের পর্যবেক্ষণ— অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই। শুধুমাত্র ধারণার ভিত্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম হয় না (Malegaon Blast)।
পুরোহিত পরে এক সাক্ষাৎকারে নিজের দীর্ঘ লড়াই ও যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন— “যে যন্ত্রণা আমি সহ্য করেছি (Malegaon Blast), তা যেন আর কেউ না পায়। যখন ভুল মানুষ ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে। এর ফলে শুধু নির্দোষ মানুষই নয়, গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানও কলঙ্কিত হয়। তবে প্রতিষ্ঠানগুলি নিজেরাই খারাপ নয়, বরং সেগুলোর দায়িত্বে থাকা ভুল মানুষগুলোই দোষী।”
তিনি অভিযোগ করেন, যাঁরা সেই সময় ক্ষমতায় ছিলেন(Malegaon Blast) (পরোক্ষভাবে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের দিকেই ইঙ্গিত), তারাই তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছিল। পুরোহিত আরও বলেন, “প্রথম দিন থেকেই আমরা একই কথা বলে আসছিলাম। আমরা কখনো আমাদের বক্তব্য বদলাইনি। আমি ২০০৮ সালের ২৪ নভেম্বরেই লিখিতভাবে সত্য জানিয়েছিলাম। আজ আদালত সেই সত্যই প্রতিষ্ঠিত করল।”
পুরোহিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি জম্মু-কাশ্মীর থেকে আরডিএক্স এনে তা নিজ বাড়িতে বোমা বানানোর কাজে ব্যবহার করেন। কিন্তু আদালত জানায়, তাঁর বাড়িতে কোনো বিস্ফোরক সংরক্ষণ বা তৈরির প্রমাণ নেই (Malegaon Blast)। ঘটনাস্থলের কোনো সঠিক স্কেচ তৈরি হয়নি, কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ হয়নি। নমুনাগুলো দূষিত ছিল, ফলে রিপোর্টও বিশ্বাসযোগ্য নয়।
আদালত আরও জানায়, যে মোটরসাইকেলে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, তার চ্যাসিস নম্বরই স্পষ্ট ছিল না। এমনকি এই বাইকটি ঘটনার ঠিক আগে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের দখলে ছিল, এমনও প্রমাণ মেলেনি (Malegaon Blast)। ফলে গোটা মামলার ভিত্তিই দুর্বল ছিল বলে মনে করেন বিচারক।
২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও শহরে এক মসজিদের কাছে রাখা একটি মোটরবাইকে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় প্রাণ হারান ছয়জন, আহত হন অন্তত ১০১ জন। এই ভয়াবহ ঘটনার জন্যই দীর্ঘদিন ধরে চলছিল বিচার প্রক্রিয়া, যার নিষ্পত্তি হলো আজ।
“আমি খুব খুশি আজ। এই দেশ দুর্দান্ত, গণতন্ত্র দুর্দান্ত। কিন্তু দেশকে দুর্বল করে তোলে যখন নির্দোষদের ফাঁসানো হয়। এটা যেন আর কখনো না হয়,” — বললেন পুরোহিত।
যখন তাঁকে “হিন্দু সন্ত্রাসবাদ” বা “সাফরন টেররিজম” নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি শুধু বলেন, “এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।”