মুম্বই থেকে মাত্র ৬০ কিমি দূরে থানে জেলার বোরিভালি ও পদঘা গ্রামের উপর বার বার সন্দেহের ছায়া।গত ২ জুন মহারাষ্ট্র এটিএস (Maharashtra ATS) এই দুই গ্রামে একযোগে ২২টি জায়গায় হানা দেয়। এই অভিযানে অংশ নেন ২৫০-রও বেশি নিরাপত্তা কর্মী। তদন্তকারীদের মতে, অনেক যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে, তাঁরা সম্প্রতি হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে গেছেন।
এই অভিযানে (Maharashtra ATS) অন্যতম লক্ষ্য ছিলেন ফারাক জুবের মোল্লা, যিনি একজন ৬০ বছর বয়সি জমির দালাল। তাঁর নাম আগে সিমি (SIMI)-র সঙ্গে জড়িয়ে ছিল। তাঁর বড় ভাই হাসিব মোল্লা ২০০২–০৩ সালের মুম্বই লোকাল ট্রেন বিস্ফোরণে দোষী সাব্যস্ত হন।
আরও একজন, সাকিব নাচান — যাঁর নাম বহু সন্ত্রাস মামলায় জড়িয়েছে — তাঁর বাড়িও তল্লাশি হয় (Maharashtra ATS)। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এনআইএ (NIA)-র অভিযানে তাঁকে মূল হোতা বলা হয়। একই বছর আগস্ট মাসে তাঁর ছেলে শামিলকেও আইএস-এর স্লিপার সেলের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, NIA-এর অভিযোগ অনুযায়ী পদঘা গ্রামকে ‘মুক্ত এলাকা’ বা ‘আল শাম’ ঘোষণা করে সেখানে যুবকদের বসবাস করতে উৎসাহিত করা হতো (Maharashtra ATS)। ‘বায়াত’ (আইএসের প্রতি আনুগত্যের শপথ) নেওয়ার কথাও উঠে এসেছে।
ডিসেম্বর মাসের অভিযানে একটি পিস্তল, এয়ারগান, তলোয়ার, ৬৮ লক্ষ টাকা নগদ, হামাসের পতাকা ও বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্র বাজেয়াপ্ত হয় বলেও দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তবে গ্রামের বহু বাসিন্দা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, পদঘা এক সময় স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নাম ছিল, আর এখন কিছু ঘটনায় গোটা গ্রামের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।
একই সঙ্গে নিরীহ মানুষও বিপাকে পড়েছেন। গ্রামের মানুষ জানান, তদন্ত চলতে থাকার ফলে অনেকের চাকরির অফার বাতিল হয়েছে, বিয়ের কথাও ভেঙে গেছে। রামিজা নাচান বলেন, তাঁর দুই ছেলে রাফিল (২১) ও রাজিল (২২) কে তাঁরা হজে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। ছেলেরা মিলেই একটি ট্যাক্সি চালাতো, বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিল। এখন তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
আরও এক বাসিন্দা আবুবকর কুন্নাথপিদিকল জানান, তাঁর ছেলে মুনজির, যিনি একজন হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং নিজস্ব ব্যবসা করেন, তাকেও গভীর রাতে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এখনো তদন্ত চলছে। তবে পদঘা ও বোরিভালির এই জটিল গল্প এখনো বহু প্রশ্নের উত্তর অধরা রেখেছে।