কলকাতার কসবা এলাকায় কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের (Kasba Case) ঘটনায় এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক আইনজীবী। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে দায়ের করা আবেদনে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে এবং আদালতের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত শেষ করার আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে নির্যাতিতার নিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে এই আবেদনে (Kasba Case)।
সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী সত্যম সিংয়ের পেশ করা এই আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই ভয়াবহ ঘটনায় অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়িয়ে অবমাননাকর ও অপমানজনক মন্তব্য করেছেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্র (Kasba Case)। এমন মন্তব্যে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং নির্যাতিতার মানসিক যন্ত্রণা আরও বেড়েছে বলে দাবি আবেদনে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টেও তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। বিচারপতি সৌমেন সেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায়, সায়ন দে এবং বিজয় কুমার সিংহল। আদালত তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করে মামলার অনুমতি দিয়েছে এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে শুনানির দিন নির্ধারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই মামলাকারীদের দাবি, কসবাকাণ্ডের তদন্ত যেন অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে ও আদালতের কঠোর নজরদারিতে হয়। পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত কলেজে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়েছে। আদালত ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ও অন্যান্য পক্ষকে নোটিস পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই কাণ্ডে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তের মধ্যেই মূল অভিযুক্তের আরও একটি অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যা ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
অন্যদিকে, সোমবারই দিল্লি থেকে রাজ্যে এসে পৌঁছেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার নির্দেশে চার সদস্যের এই দল গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস ও বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিং। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রাক্তন ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখী এবং রাজ্যসভার সাংসদ মননকুমার মিশ্র।
এই দল রাজ্যের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন এবং রিপোর্ট তুলে দেবেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের হাতে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে। আদালত, কেন্দ্র ও রাজ্যের টানাপোড়েনের মাঝে নির্যাতিতার জন্য সত্যিই সুবিচার আসবে কি না, তা নিয়েই এখন জনমনে উৎকণ্ঠা।